করোনায় ভর করে টাকার পাহাড়ে তারা
করোনাভাইরাসের কারণে মহাসংকটে রয়েছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। কেউ চাকরি হারিয়ে নিঃস্ব, কেউ প্রিয়জনকে হারিয়ে রীতিমতো পাগল হওয়ার জোগাড়। তবে বৈশ্বিক এ মহামারি কিছু মানুষের জন্য উল্টো ফলও বয়ে এনেছে। যে করোনা অন্যদের পথে বসিয়েছে, সেই ভাইরাসে ভর করেই কিছু লোক টাকার পাহাড়ে চড়ে বসেছেন।
একনজরে দেখে নেয়া যাক তেমন কিছু ধনীদের
জেফ বেজোস
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোস আগে থেকেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। তবে করোনা মহামারিতে তার ব্যবসা এতটাই বেড়েছে যে, এই ধারা চলতে থাকলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার হবেন তিনি। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্যমতে, বর্তমানে বেজোসের মোট সম্পদের মূল্য অন্তত ১৯৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ইলন মাস্ক
বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলা মোটরসের প্রধান ইলন মাস্কেরও চলছে দারুণ সুসময়। তরুণ এ ব্যবসায়ী সম্প্রতি বিশ্বের শীর্ষধনীর তালিকায় বিল গেটসকে পেছনে ফেলেছেন। বর্তমানে প্রায় ১৩২ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক তিনি।
এরিক ইউয়ান
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে প্রযুক্তি জগতে সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাম বোধহয় জুম। অনলাইন ক্লাস, ইন্টারভিউ, টকশোসহ নানা ধরনের অনুষ্ঠান হচ্ছে ভিডিওকলের এই অ্যাপ দিয়ে। করোনাকালে জুমের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর মালিক এরিক ইউয়ানের সম্পদও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। বর্তমানে তার মোট সম্পদের মূল্য প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলার। বেজোস ও মাস্কের তুলনায় ইউয়ানের সম্পদ অনেক কম হলেও মাত্র এক বছর আগে চালু করা অ্যাপ দিয়ে বিলিয়নিয়ার বনে যাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়!
জন ফোলি
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়িয়ে ব্যায়াম করবেন কীভাবে? ঘরের মধ্যে সাইকেল চালান! এবারের মহামারি শুরুর পর থেকে এটাই করছেন অনেকে। ফলে একদিকে চাহিদা বেড়েছে ইনডোর সাইকেলের, অন্যদিকে শেয়ারের দাম বেড়েছে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পেলোটনের। সেই সুবাদে রাতারাতি বিলিয়নিয়ার হয়ে গেছেন পেলোটনের প্রধান নির্বাহী জন ফোলি।
টোবিয়াস ল্যুটকে
জার্মানির কোবলেন্ৎসে জন্ম নেয়া টোবিয়াস ল্যুটকে ২০০২ সালের দিকে মাত্র ২১ বছর বয়সে কানাডা পাড়ি জমান। তখন বাড়ির গ্যারেজে শুরু করেছিলেন ঘরে বসে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা। পরে গড়ে তোলেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান শপিফাই। করোনা সংকটে হাজার হাজার মানুষকে অনলাইনে পণ্য বিক্রি করতে সহায়তা করেছে ল্যুটকের প্রতিষ্ঠানটি। ফলে কানাডার ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল এন্টারপ্রাইজ’ নির্বাচিত হয়েছে শপিফাই। সেই সঙ্গে এর মালিকের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার৷
উগুর সাহিন
সম্প্রতি মার্কিন জায়ান্ট ফাইজার এবং জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেকের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এতে করোনা নির্মূলে নতুন আশা সঞ্চার হওয়ার পাশাপাশি হু হু করে বেড়েছে প্রতিষ্ঠান দু’টির শেয়ারের দাম। সেই সুবাদে বেড়েছে বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী উগুর সাহিনের সম্পদও। করোনাকালে তার সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।
এরিক রিশটার
করোনার বিস্তার ঠেকাতে যখন জার্মানিতে সব রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, তখন ঘরে ঘরে টাটকা খাবার পৌঁছে দিতে শুরু করে হ্যালোফ্রেশ। এতে বার্লিনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা এরিক রিশটারেরও কপাল খুলে যায়। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই বিলিয়নিয়ার হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন তিনি।
ম্যাকেঞ্জি স্কট
২০১৯ সালে জেফ বেজোসের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের সময় অ্যামাজনের ৪ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা পান ম্যাকেঞ্জি স্কট। সে সময় এর বাজারমূল্য ৩৫ বিলিয়ন ডলার থাকলেও করোনার সুবাদে গত সেপ্টেম্বরে তা ফুলে-ফেঁপে দাঁড়ায় ৬৮ বিলিয়নে, যা তাকে বিশ্বের ১২তম শীর্ষ ধনীতে পরিণত করে। নারীদের মধ্যেও বর্তমানে এক নম্বর ধনী তিনি।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
কেএএ/এমএস