করোনায় মৃত্যু : চীনে মুখও খুলতে পারছেন না স্বজনরা!
উহানে করোনাভাইরাসে মৃতদের স্বজনরা বলছেন, চীনের প্রশাসন তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গ্রুপ ডিলিট করে দিয়েছে এবং মুখ বন্ধ রাখতে চাপ প্রয়োগ করছে। করোনাভাইরাসের উৎস তদন্তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞদের উহানে অবস্থানের মধ্যেই এসব অভিযোগ এসেছে চীনের বিরুদ্ধে। খবর এএফপির।
করোনায় মৃতদের স্বজনরা অনলাইনে একজোট হয়ে একটি গ্রুপ গঠন করে উহান কর্মকর্তাদের কাছে জবাবদিহি দাবি করেছেন। কর্মকর্তারা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাজেভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে বলে অভিযোগ তোলেন তারা।
এক স্বজন জানান, কর্মকর্তাদের বাধার কারণে তাদের এই উদ্যোগ সীমিত হয়ে যাচ্ছে। কর্মকর্তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গ্রুপগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন ও স্বজনদের হুমকি দিচ্ছেন। ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞদের তদন্তের সময়ে কোনো সমালোচনা বন্ধ রাখতে বা বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে সম্প্রতি চাপ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঝ্যাং হাই নামে গ্রুপের এক সদস্য বলেন, উইচ্যাটে এক বছর ধরে সক্রিয় ৮০ থেকে ১০০ পরিবারের সদস্যের একটি গ্রুপ গত দশদিন আগে হঠাৎ গায়েব করে দেয়া হয়। ঝ্যাং বলেন, ‘এটা প্রমাণ করে যে তারা (চীনা প্রশাসন) খুবই আতংকিত রয়েছে। তারা ভয় পাচ্ছে যে এসব পরিবার ডব্লিউএইচও’র বিশেষজ্ঞদের সংস্পর্শে আসতে পারে।’
জানুয়ারির ১৪ তারিখে ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞ দল উহানে পৌঁছায়। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে আগামী বৃহস্পতিবার তাদের তদন্ত শুরু করার কথা রয়েছে।
৫১ বছর বয়সী ঝ্যাংয়ের বাবা মহামারির প্রথম দিকে করোনায় মারা যান। ঝ্যাং বলেন, ‘ডব্লিউএইচও যখন উহানে পৌঁছায়, তখন গ্রুপটি ধ্বংস করে দেয় প্রশাসন। এর ফলে অনেক সদস্যের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
আরেক পরিবারের সদস্যও গ্রুপ ডিলিট করার কথা নিশ্চিত করেছেন। ইউচ্যাট পরিচালনা করে চীনা ডিজিটাল জায়ান্ট টেনসেন্ট। যেসব বিসয়বস্তু চীন সরকারের কাছে আপত্তিজনক মনে হয় তা জনপ্রিয় প্লাটফর্মগুলো নিয়মতিভাবে সেন্সর করে থাকে।
স্বজনদের অভিযোগ, উহান ও হুবেই প্রদেশে যখন করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে তখন প্রশাসন তা গোপন রাখার চেষ্টা করে যা সংক্রমণ বিস্তারে সহায়তা করেছে। চীনে করোনায় মৃত ৪ হাজার ৬৩৬ জনের মধ্যে শুধু উহান প্রদেশেই মারা গেছে প্রায় ৩ হাজার ৯০০ জন।
এমকে/এমএস