ভারতের পাশে দাঁড়াতে চাওয়া পাকিস্তানেই সংকট, একদিনে রেকর্ড মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:১৪ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২১

করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন পার করল পাকিস্তান। গত মঙ্গলবার দেশটিতে প্রথমবারের মতো দুই শতাধিক মানুষ ভাইরাসজনিত কারণে মারা গেছেন। সংক্রমণের এমন ঊর্ধ্বগতির মুখে আবারও কঠোর লকডাউনের চিন্তা করছে ইমরান খানের সরকার।

পাকিস্তানের ন্যাশনাল কমান্ড অপারেশন সেন্টারের (এনসিওসি) তথ্যমতে, মঙ্গলবার দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ২০১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে সেখানে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৭ হাজার ৫৩০ জন।

এর আগে পাকিস্তানে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ছিল ১৫৭ জন। সেটিও দেখা গিয়েছিল চলতি সপ্তাহেই।

দেশটিতে মঙ্গলবার নতুন করে ৫ হাজার ২৯২ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে সেখানে মোট ৮ লাখ ১০ হাজার ২৩১ জন আক্রান্ত হলেন।

pakistan

সংক্রমণের পাশাপাশি আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পাকিস্তানে। মঙ্গলবার এর হার ছিল ২ দশমিক ২ শতাংশ, যা মহামারি শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ।

মহামারি মোকাবিলায় এখনও যথেষ্ট পরিমাণে টিকা জোগাড় করতে পারেনি পাকিস্তান। সাড়ে ২১ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে এ পর্যন্ত মাত্র ২০ লাখ ডোজ বিতরণ করা হয়েছে।

পাকিস্তানের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংক্রমণ না কমলে শিগগিরই হাসপাতালগুলোর ধারণক্ষমতা পূরণ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এমনিতেই দেশটিতে ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেনের মতো চিকিৎসা উপকরণের সংকট রয়েছে।

এনসিওসি জানিয়েছে, দেশটির ৬৩১টি হাসপাতালে মঙ্গলবার অন্তত ৬ হাজার ২৮৬ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। ইতোমধ্যে সেখানকার বড় হাসপাতালগুলোতে ৭০ শতাংশ ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেন সুবিধা সম্পন্ন শয্যা রোগীদের দখলে রয়েছে।

pakistan

নিজ দেশেই রোগীদের পর্যাপ্ত চিকিৎসাসুবিধা নিয়ে সংশয় থাকলেও সম্প্রতি করোনায় বিপর্যস্ত প্রতিবেশী ভারতকে সহায়তা করতে চেয়েছে পাকিস্তান। গত শনিবার ইমরান খানের সরকার ঘোষণা দিয়েছে, তারা ভারতের প্রতি ‘সংহতির নিদর্শন’ হিসেবে ভেন্টিলেটর, ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ পাঠাতে চায়।

এক টুইটে পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি বলেন, পাকিস্তান সবার আগে মানবতায় বিশ্বাস করে বলেই এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।

তবে গত সপ্তাহেই পাকিস্তানের বেশ কিছু জায়গায় অক্সিজেন সিলিন্ডারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসলে সেখানকার পরিস্থিতিও ভারতের মতো হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে অন্য দেশে সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাব নিয়ে সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

চলতি সপ্তাহে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মুখে দেশটির বেশ কয়েকটি শহরে চলাচলে বাড়তি কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। করোনাবিধি বাস্তবায়নে গত সোমবার পাকিস্তানের ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ শহরে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে।

পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহায়ক ডা. ফয়সাল সুলতান জানিয়েছেন, মানুষজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরার মতো সতর্কতাগুলো না মেনে চললে ভবিষ্যতে এ ধরনের কড়াকড়ি আরও বাড়ানো হবে।

সূত্র: ডন, জিও টিভি

কেএএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।