ইন্দোনেশিয়ার বিমানবন্দরে করোনা টেস্টে ভয়াবহ জালিয়াতি
ইন্দোনেশিয়ার একটি বিমানবন্দরে করোনা টেস্টে ভুয়া পজিটিভ রিপোর্ট আসছে বলে অভিযোগ করছিলেন যাত্রীরা। একারণে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এক পুলিশ কর্মকর্তা ছদ্মবেশে যাত্রী সেজে পরীক্ষা করতে যান। ঘটনাক্রমে তার রিপোর্টও পজিটিভ আসে। তখন অন্য পুলিশ সদস্যরা বিমানবন্দরের পরীক্ষাগারে অভিযান চালান। সেখান থেকে একাধিকবার ব্যবহার করা টেস্ট কিট উদ্ধার করেন তারা।
বৃহস্পতিবার বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, করোনা টেস্টের জন্য নাকের ভেতর থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে যে কাঠি ব্যবহার করা হয়, সেটি ধুয়ে ফের বিক্রি ও ব্যবহার করার অভিযোগে সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ওষুধ কোম্পানির কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ বলছে, বিমানবন্দরটিতে অন্তত নয় হাজার যাত্রীর নাক থেকে নমুনা সংগ্রহে যে কিট বা কাঠি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি এর আগেও ব্যবহার করা হয়েছিল। সেখানে গত ডিসেম্বর থেকে এই জালিয়াতি চলছিল।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বের বহু দেশে প্লেনে ভ্রমণ করতে হলে যাত্রীদের কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ লাগছে। সেজন্য অনেক জায়গায় বিমানবন্দরের ভেতরেই যাত্রীদের নমুনা সংগ্রহ এবং তাৎক্ষণিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রার মেডানে অবস্থিত কুয়ালানামু বিমানবন্দরেও রয়েছে একই ব্যবস্থা। সেখানে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত কিমা ফার্মার সরবরাহ করা র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট ব্যবহার করছিল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু যাত্রীরা অভিযোগ করছিলেন, তারা ভুয়া পজিটিভ রিপোর্ট পাচ্ছেন। এর প্রেক্ষিতে বিমানবন্দরের পরীক্ষাগারে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় একাধিকবার ব্যবহার করা বেশ কিছু টেস্ট কিট।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, এই জালিয়াতির মাধ্যমে কিমা ফার্মার কিছু অসাধু কর্মকর্তা অন্তত সোয়া লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন। এই অর্থ দিয়ে এক কর্মকর্তা বিলাসবহুল বাড়ি বানিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ভয়াবহ এই জালিয়াতির ঘটনায় কিমিয়া ফার্মাকে আইনের মুখোমুখি দাঁড়াতে হতে পারে। অবশ্য প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করেছে এবং অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ আরো জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এশিয়ার যে কয়টি দেশে করোনাভাইরাস ব্যাপক হারে ছড়িয়েছে, তাদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া অন্যতম। দেশটিতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৯ লাখ রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৪৬ হাজারেরও বেশি।
কেএএ/এমকেএইচ