করোনার সঙ্গে বেঁচে থাকার কৌশল আয়ত্ত করছে সিঙ্গাপুর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:১৪ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

করোনা মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে মাত্র ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক কম। যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিধর দেশেও যেখানে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে সেখানে সিঙ্গাপুর করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ সফলই বলা চলে।

এরইমধ্যে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮২ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের দুই ডোজ দিয়েছে সিঙ্গাপুর। এর আগে গত জুনে দেশটির সরকার ঘোষণা দেয় যে, করোনাভাইরাসের সঙ্গে বেঁচে থাকার কৌশলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তারা।

জুন থেকেই করোনাভাইরাসের বিধি-নিষেধ কিছুটা শিথিল করতে শুরু করে সিঙ্গাপুর। কিন্তু বিধি-নিষেধ শিথিল হতে থাকায় সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। ফলে সবকিছু পুনরায় চালু করার চিন্তা স্থগিত করা হয় এবং কিছু বিধি-নিষেধ নতুন করে জারি করা হয়।

তবে সিঙ্গাপুর সরকার সংক্রমণ বৃদ্ধিকে উত্তরণের রীতি বলে উল্লেখ করেছিল। আর দেশের জনগণও এতদিনে করোনার সঙ্গে বেঁচে থাকা শিখে গেছে।

সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অং ইয়ে কুং শুক্রবার এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, করোনাকে সঙ্গে নিয়েই নতুন স্বাভাবিক জীবন-যাপনের পথে রয়েছি আমরা। তবে এই ভ্রমণটা অনিশ্চিত এবং এতে নানা রকম মোড় নিতে পারে।

বর্তমানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলেও ৯৮ শতাংশের বেশি রোগীর উপসর্গহীন অথবা মৃদু উপসর্গ রয়েছে।

শনিবার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা হাসপাতালগুলোতে চাপ কমাতে উপসর্গহীন এবং মৃদু উপসর্গের রোগীদের বাড়িতেই চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ করে ১২ থেকে ৬৯ বছর বয়সী যারা ভ্যাকসিনের দুই ডোজই গ্রহণ করেছেন তারা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

নতুন নিয়মের অধীনে এমন ১০ জন রোগীর মধ্যে সাতজনই সুস্থ হয়ে উঠতে সক্ষম। এসব রোগীরা বাড়িতে চিকিৎসা নিলে হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ কমবে। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসক ড. অং ইউ জিন রং বলেন, মেডিক্যাল স্টাফরা রোগীদের চাপ নিতে নিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।

অং ইউ বলেন, করোনার সঙ্গে বসবাসের অর্থ হচ্ছে এরইমধ্যে সিঙ্গাপুর বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ফেস মাস্ক ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ওয়ার্ক ফ্রম হোম, বাড়িতে তৈরি খাবার খাওয়া, ঘোরাঘুরি সীমিত করে ফেলাসহ বেশ কিছু বিষয় তারা আয়ত্ত্ব করে ফেলেছে।

সিঙ্গাপুরে ভ্যাকসিনের হার বেশি হওয়ায় সবকিছু আরও সহজ হয়েছে। ইয়েল-এনইউএস কলেজের অধ্যাপক জেনেত ইকোভিক্স বলেন, দেশব্যাপি টেস্টিং, ট্র্যাকিং, গণহারে ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে এগিয়ে আছে সিঙ্গাপুর। তারা এগুলো চালিয়ে যাবে।

অং ইউ বলেন পুরো বিশ্বের ক্ষেত্রে যদি বলা হয় যে, আমরা করোনার সঙ্গে কিভাবে বেঁচে থাকা শিখব তাহলে আমাদের মূল কিছু বিষয়েই ফিরে যেতে হবে। হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে, মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, যে কোনো সময় অসুস্থ বোধ করলে বাড়িতেই অবস্থান করতে হবে।

টিটিএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।