ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন
লিখিত প্রতিশ্রুতি ছাড়া জোট নয়: মহারাজা প্রদ্যুৎ

আগরতলা সংবাদদাতা
বিধানসভা নির্বাচনের মুখে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে রাজনৈতিক পারদ ক্রমেই চড়া হতে শুরু করেছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে যারা ‘ঘরবন্দি’ ছিলেন, তারাই এখন শাসকের বিরুদ্ধে গর্জে উঠছেন। লম্বা লাইনে মিছিল করতেও দেখা যাচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে।
রাজ্যের বিরোধী দলগুলো বলছে, পাঁচ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তৃত্বে থাকা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন তারা। তাদের অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে সব উপ-নির্বাচন ও নগর সংস্থার নির্বাচনে সাধারণ জনগণকে ভোটদান থেকে বিরত রাখতে যাবতীয় চেষ্টা করেছে বিজেপি।
এমন অবস্থায় খুব দ্রুততার সঙ্গে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছেন রাজ্যের সাধারণ জনগণ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পা মিলিয়ে মিছিলেও অংশ নিচ্ছেন তারা।
এদিকে পরিস্থিতির নিরিখে রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ভোট ভাগাভাগি রুখতে সম্প্রতি জোটের পথ বেছে নেয়। এরই মধ্যে বিরোধী সিপিআইএম ও কংগ্রেস তাদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে।
প্রশ্ন ছিল পাহাড়ের নির্বাচন নিয়ে। কারণ, পাহাড়ে গত পাঁচ বছরে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) বা সিপিআইএম ও কংগ্রেস একপ্রকার নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। অনেকের মতে, এ অঞ্চলে দল দুটি শূন্য ভূমিকায় অবস্থান করছে।
রাজনৈতিক মহলের অভিমত, পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তার করা তিপ্রা মথাকে বাগে আনতে না পারলে কোনও অবস্থাতেই বিজেপিকে পরাস্ত করা সহজ হবে না। এখানে বাদ সাধছেন তিপ্রা মথা সুপ্রিমো তথা মহারাজা প্রদ্যুৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মণ।
আগে থেকেই জটিলতার বিষয়টি টের পেয়ে জনজাতিদের (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার লক্ষ্যে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন মহারাজা প্রদ্যুৎ। এ বিষেয়ে যে দল তাকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে, শুধু তাদের সঙ্গেই জোটে বাঁধতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজ্যে ফিরেও ঠিক একই কথা জানান প্রদ্যুৎ কিশোর।
মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দরে অবতরণের পর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি জানান, জনজাতিদের কখনোই ধোঁকা দেওয়া যাবে না। তাদের সাংবিধানিক অধিকার আদায়ে সবসময় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
মুখে না বললেও মহারাজা প্রদ্যুৎ এর ইঙ্গিত, যারা গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের দাবিতে সম্মতি প্রকাশ করবে, শুধু তাদের সঙ্গেই লিখিতভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামবে তার দল। তা হতে পারে নরেন্দ্র মোদী, রাহুল গান্ধী কিংবা সীতারাম ইয়েচুরির দল।
প্রদ্যুৎ কিশোরের স্পষ্ট জবাব, লিখিত প্রতিশ্রুতি ছাড়া তিনি কারও সঙ্গে কথা বলতে রাজি নন। প্রয়োজনে তার দল পাহাড় ও সমতলে এককভাবে লড়াই করতেও প্রস্তুত।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা শেষে বিমানবন্দর থেকে একটি বাইক র্যালি করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় এডিসি'র সদর দপ্তর খুমুলুঙে। সেখানে তিনি জনজাতি নারীদের নিয়ে আয়োজিত একটি সভায় যোগ দেন।
এসএএইচ