এমপির মরদেহ টুকরো করে রাখা হয় ফ্রিজে, ফেলা হয় ট্রলিব্যাগে করে

ধৃমল দত্ত
ধৃমল দত্ত ধৃমল দত্ত , পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি কলকাতা
প্রকাশিত: ০২:০২ এএম, ২৩ মে ২০২৪

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নানান তথ্য পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। তার লাশ টুকরো টুকরো করে দফায় দফায় বিভিন্ন জায়গায় সরানো হয়েছে।

প্রায় ১০ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত বুধবার (২২ মে) ঝিনাইদহ-৪ আসনের সসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মৃত্যুর বিষয়টি সামনে আসে। বুধবার সকালে নিউটাউনের ওই অভিজাত আবাসনে আসে নিউটাউন থানা পুলিশ। পরে সঞ্জীবা গার্ডেনের (ব্লক ৫৬ বিইউ) ঘর খুলে ভেতরে রক্তের দাগ দেখতে পায়, পাশাপাশি ট্রলিব্যাগ উদ্ধার করা হয়। সেই ব্যাগের মধ্যেও রক্তের দাগ ছিল।

jagonews24

সূত্রে জানা গেছে, ওই আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, গত ১৩ মে এই আবাসনে ওঠেন আনোয়ারুল আজীম। তার সঙ্গে ছিলেন আরও তিনজন, যার মধ্যে ছিলেন একজন নারী। এরপর ওইদিনই আনোয়ার আবাসনের বাইরে না বেরোলেও বাকিরা বেশ কয়েকবার ওই আবাসনে আসা-যাওয়া করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার পার্শ্ববর্তী শহরাঞ্চল রাজারহাট নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় সংসদ সদস্যকে। তারপর দেহ টুকরো টুকরো করা হয়। যেন কাটা দেহ থেকে গন্ধ না ছড়ায় তাই দেহাংশগুলো ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন

আনোয়ারুল আজীমকে খুন করার পর তার মরদেহ আবাসন থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। সিসিটিভিতে ধরা পড়ার ভয়ে আনারের দেহ টুকরো টুকরো করা নেওয়া হয়েছিল, যেন কেউ বুঝতে না পারে।

এই টুকরো দেহাংশ ফেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দুজনকে। সেই দুই ব্যক্তির হদিস পাওয়া গেলেই জানা যাবে কোথায় কোথায় দেহাংশ ফেলা হয়েছে। ওই আবাসন থেকে ট্রলিব্যাগ পাওয়া গেছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ওই ব্যাগে করেই আনারের দেহাংশ ফেলা হয়েছে।

এছাড়াও বুধবার রাতে আনোয়ারুল আজীম আনোয়ার খুনে ব্যবহৃত একটি গাড়ি উদ্ধার করেছে নিউটাউন থানার পুলিশ। গাড়ির নম্বর WB 18AA 5473। সঞ্জীবা গার্ডেনসে বিলাসবহুল আবাসনের সিসিটিভি দেখে গাড়িটিকে শনাক্ত করা হয়। উদ্ধার গাড়িটি থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করে।

এই গাড়িটি নিয়ে আনোয়ারুল আজীম আনার নিখোঁজ হওয়ার দিন থেকে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছিলেন। সেই গাড়িতে আর কে ছিল তার খোঁজ করছে পুলিশ। গাড়ির মালিককে ডেকে পাঠানো হয় নিউটাউন থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা জন্য।

jagonews24

সঞ্জীবা গার্ডেনস অঞ্চলটি নিউটাউন থানার অন্তর্গত সেই কারণেই নিউটাউন থানা পুলিশ একটি খুনের মামলা রুজু করেছে। এরই মধ্যেই মামলার তদন্তভার রাজ্য পুলিশের সিআইডির হাতে দেওয়া হয়েছে।

গত ১২ মে ভারতের কলকাতায় আসার পরদিন ১৩ মে থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন এই সংসদ সদস্য। এরপর বুধবার সকালের দিকে তার খুনের খবর সামনে আসে। জানা যায়, কলকাতার কাছেই নিউটাউনের অভিজাত আবাসন সঞ্জীবা গার্ডেনের (ব্লক ৫৬ বিইউ) রুমে আনারকে খুন করা হয়।

বুধবার (২২ মে) সকালের দিকে ঘটনাস্থলে যায় স্থানীয় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনস্ত নিউটাউন থানার পুলিশ। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ফরেনসিক দল, ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা। এমনকি খুনের গুরুত্ব অনুধাবন করে তদন্তে নামে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি)।

ডিডি/এমআরএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।