ছাত্র-জনতার ওপর হেলিকপ্টার থেকে বোমা নিক্ষেপের নির্দেশ দেন হাসিনা

২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর হেলিকপ্টার থেকে বোমা নিক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর মধ্যে হওয়া এ সংক্রান্ত একটি ফোনালাপ শোনেছেন বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জবানবন্দি পেশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের ৪৯তম সাক্ষী সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এরপর সাক্ষীকে জেরা করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আমীর হোসেন। এ সময় প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম উপস্থিত ছিলেন।

আন্দোলনকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নিহত তরুণ মাহামুদুর রহমান সৈকতের বোন সেবন্তী নিজেও একজন জুলাইযোদ্ধা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন তিনি।

সেবন্তী জুলাই-আগস্টের কথা উল্লেখ করে বলেন, তখন আন্দোলন চলমান ছিল এবং প্রতিনিয়ত আন্দোলনকারীদের হত্যা করা হচ্ছিল। পরে ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী, খুনি ও অবৈধভাবে নির্বাচিত তৎকালীন সরকারপ্রধান হাসিনা জনস্রোতের মুখে পদত্যাগ করে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার কয়েক মাস পরে তিনি হাসিনার কিছু ফোন রেকর্ড শুনতে পান। আল-জাজিরা তার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিল। সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় আল-জাজিরার সাংবাদিক তাকে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাকসুদ কামালের সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপ শোনান। সেই ফোনালাপে হাসিনা আন্দোলনকারীদের রাজাকার আখ্যায়িত করে বলেন, ইংল্যান্ডের মতো শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হবে। অপর ফোনালাপে মেয়র তাপসকে হাসিনা ড্রোন ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয় এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার করে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন। কথোপকথনে হাসিনা মোহাম্মদপুর এলাকার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে সেবন্তীর ভাই পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।

সেবন্তী বলেন, পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে হাসিনার আরেকটি ফোনালাপ শুনতে পান। এতে হাসিনা জানান যে তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর বোমা ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন।

সাক্ষী জানান, তার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আল-জাজিরা তার যে সাক্ষাতকার নিয়েছিল এর কিছু অংশ একটি ডকুমেন্টারি হিসেবে নিজস্ব পেজে প্রকাশ করে।

এফএইচ/একিউএফ/এমএস