ফরিদপুর তিন আসন থেকে ভাঙ্গা নিয়ে আলাদা আসন করতে হাইকোর্টের রুল
ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসন (ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন, সদরপুর উপজেলা) থেকে ভাঙ্গা উপজেলাকে আলাদা করে ফরিদপুর-৫ সংসদীয় আসন কেন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টাদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব।
এর আগে ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসন (চরভদ্রাসন এবং সদরপুর উপজেলা) এবং ফরিদপুর-৫ সংসদীয় আসন (ভাঙ্গা উপজেলা) পুনর্বহাল চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের অনুমতি নিয়ে রিটটি করা হয়।
ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত সীমানা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ওই প্রজ্ঞাপনে চরভদ্রাসন, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলাকে (দুই ইউনিয়ন বাদে) নিয়ে ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করে। এই প্রজ্ঞাপনকে চ্যালেঞ্জ করে রিটটি দায়ের করা হয়। এছাড়া রিটে জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণী আইন ২০২১-এর ৭ ধারা এবং সংবিধানের ১২৫(ক) অনুচ্ছেদকেও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
ফরিদপুরে যান চলাচল স্বাভাবিক, সড়কের পাশে অবস্থান আন্দোলনকারীদের
তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন দুটি সংসদীয় আসনকে (ফরিদপুর-৪ ও ফরিদপুর-৫) একত্রিত করে তিনটি উপজেলার সমন্বয়ে একটি আসন (ফরিদপুর-৪) করে। রিট আবেদনকারীদের কয়েকজন পূর্বের মতো ফরিদপুর-৪ ও ফরিদপুর-৫ দুটি স্বতন্ত্র সংসদীয় আসন পুনর্বহালের জন্য আবেদন করলে নির্বাচন কমিশন তা নামঞ্জুর করে। অন্যদিকে ভাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়নকে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করে। পরে হাইকোর্ট দুই ইউনিয়ন সরানো প্রশ্নে রুল জারি করেন।
ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং ফরিদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, দলটির অঙ্গসংগঠন জিয়া শিশু-কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলম রেজা, আইনজীবী এম্পাহাত খান, ব্যবসায়ী এম এম শহিদুল ইসলাম শাহীন, চরভদ্রাসন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাজাহান শিকদারসহ সদরপুর এবং চরভদ্রাসনের ১৬ জন ভোটারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব রিটটি দায়ের করেন।
এর আগে নির্বাচন কমিশন আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত সীমানা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেই প্রজ্ঞাপনে চরভদ্রাসন এবং সদরপুর তথা ভাঙ্গা উপজেলার একটি অংশকে নিয়ে ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করে। একই সঙ্গে ভাঙ্গা উপজেলা থেকে আলগি এবং হামিরদি ইউনিয়ন দুটি বিচ্ছিন্ন করে পার্শ্ববর্তী সংসদীয় আসন ফরিদপুর-২ এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
১৯৭০ সালের নির্বাচন থেকে ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনটি চরভদ্রাসন এবং সদরপুর উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত ও ভাঙ্গা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৫ সংসদীয় আসন নির্ধারিত ছিল। ২০০৮ সালে অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশে দুটি সংসদীয় আসনকে একত্রিত করে ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসন গঠন করা হয়। অত্র রিট পিটিশনের আবেদনকারীরা ২০০৮ সালের আগের মতো ফরিদপুর-৪ এবং ফরিদপুর-৫ সংসদীয় আসন পুনর্গঠনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের আবেদন সঠিকভাবে আইনি বিচার বিশ্লেষণ না করে আগের মতো চরভদ্রাসন, সদরপুর এবং ভাঙ্গা উপজেলার (আলগি এবং হামিরদি ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত) একটি আসন ফরিদপুর-৪ বহাল রেখেই প্রজ্ঞাপন জারি করে।
রিটে নির্বাচন কমিশনের জারি করা প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে ওই পিটিশন দায়ের করা হয়। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণী আইন ২০২১ এর ৭ ধারা এবং বাংলাদেশ সংবিধানের ১২৫ (ক) অনুচ্ছেদ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
এফএইচ/ইএ/জিকেএস