মানবতাবিরোধী অপরাধ

সাতক্ষীরার এক আসামির বিরুদ্ধে দুই সাক্ষীর জবানবন্দি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৩৮ এএম, ০৬ মার্চ ২০২৩
ফাইল ছবি

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাতক্ষীরার এক আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দুইজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তারা মামলার প্রথম ও দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর রাজিয়া সুলতানা চমন জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজ প্রথম মামলায় সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এরপরে মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১২ এপ্রিল দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রোববার (১৪ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।

আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এ মামলার আসামি ছিলেন তিনজন। এদের মধ্যে আবুল হাসেম সরদার (৭৫) ও মুজিবর রহমান সরদার (৭৬) গ্রেফতার হয়েছিলেন। হাসেম আশাশুনির চাপড়াগ্রামের তাহের আলী সরদারের ছেলে। মুজিবর একই গ্রামের সদর উদ্দিনের ছেলে। মামলার আসামি রাজাকার কমান্ডার লিয়াকত সরদার মারা গেছেন। আর গ্রেফতারের পর হাসেম সরদার মারা যান। বেঁচে আছেন মুজিবর রহমান।

গত বছরের ১৩ মার্চ আশাশুনি উপজেলার গুড়গুড়ি ও চাপড়া এলাকা থেকে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দুটি মামলা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের ডাকা অধিবেশন ১ মার্চ হঠাৎ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এরই প্রতিবাদে ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ দুপুর ২টা পর্যন্ত সারাদেশে হরতালের ডাক দেওয়া হয়। সাতক্ষীরায় হরতাল পালনকালে ছাত্র-জনতা এক হয়ে মিছিল বের করেন।

সাতক্ষীরার পাকাপোল মোড় হয়ে চাপড়ালজ নামের বাড়ির সামনে গেলে মিছিলের ওপর ওই বাড়ির ছাদ থেকে আবুল হাসেম সরদারসহ তার তিন ভাই গুলি চালান। গুলিতে শহীদ হন রিকশাচালক আবদুর রাজ্জাক। আরও ১৫-১৬ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে শহরের চিলড্রেন পার্কে শহীদ আবদুর রাজ্জাককে দাফন করা হয়। পাশাপাশি চিলড্রেন পার্কের নাম পরিবর্তন করে শহীদ আবদুর রাজ্জাক পার্ক করা হয়।

১৯৭১ সালের জুলাইয়ে আশাশুনির শোভনালি ইউনিয়নের সরাপপুর গ্রামের গোরা ঠাকুর দাস, মেঘনাথ দাস, কৃষ্ণপদ দাস ও তারাপদ দাসকে চাপড়াগ্রামের মুজিবর রহমান সরদারের নেতৃত্বে বাড়ি থেকে অপহরণ করে ব্যাপক নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় আশাশুনি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন সানা বাদী হয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন।

মামলায় রাজাকার কমান্ডার লিয়াকত সরদার, আবুল হাসেম সরদার ও একই এলাকার মুজিবর রহমান সরদারকে আসামি করা হয়। তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ মামলাটি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন।

রাজাকার কমান্ডার লিয়াকত সরদার দুই মাস আগে মারা যাওয়ায় আবুল হাসেম সরদার ও মুজিবর রহমান সরদারের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

এফএইচ/এএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।