সংবাদকর্মী নিয়োগে জয়যাত্রা টিভির প্রতারণা গ্রহণযোগ্য নয়

জাহাঙ্গীর আলম
জাহাঙ্গীর আলম জাহাঙ্গীর আলম , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩২ পিএম, ২৩ মার্চ ২০২৩

সংবাদকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ সংগ্রহ করে রাষ্ট্রকে সহায়তা করে চলেছেন। এই পেশায় নিয়োজিত মফস্বল শহরের সাংবাদিকরা অনেক ক্ষেত্রে কম পারিশ্রমিকে কাজ করে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রেই তারা রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ববোধ ও পেশার প্রতি ভালোবাসা থেকে এই কাজ করেন। এ অবস্থায় সম্প্রচারের অনুমোদন ছাড়াই ‘জয়যাত্রা টিভি’ নিজেদের আইপি বা স্যাটেলাইট টিভি উল্লেখ করে সংবাদকর্মী নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেয়। একই সঙ্গে সংবাদকর্মী নিয়োগ করে এবং তাদের থেকে যে জামানত ও মাসিক চাঁদা আদায় করেছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের বেতন না দিয়ে উল্টো চাঁদা নিতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর

সমাজ ও রাষ্ট্রের পরম বন্ধুর ন্যায় কাজ করে চলা সংবাদকর্মীদের সঙ্গে জ্ঞানসারে এবং একই অভিপ্রায়ে প্রতারণার কারণে হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনকে শাস্তি দেওয়া আবশ্যক বলে মনে করেন আদালত।

হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনের দুই বছর করে কারাদণ্ডের রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব কথা উল্লেখ করেন বিচারক।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করেন আদালত। এর আগে সোমবার (২০ মার্চ) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনকে কারাদণ্ড দেন।

jagonews24

আরও পড়ুন: আদালতে মদের লাইসেন্স দেখাতে পারেননি হেলেনা জাহাঙ্গীর

দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন জয়যাত্রা টিভির জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কো-অর্ডিনেটর সানাউল্ল্যাহ নূরী ও স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ার।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক উল্লেখ করেন, জয়যাত্রা টিভি বাংলাদেশ সরকার থেকে সম্প্রচারের অনুমোদন ছাড়াই স্যাটেলাইট টেলিভিশন হিসেবে প্রচার করে সংবাদকর্মী নিয়োগের খবর প্রচার করে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার স্থানীয় সংবাদকর্মীদের ও বিদেশি প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে তাদের থেকে জামানত ও চাঁদা আদায় করেছে। সম্প্রচারের অনুমোদন ছাড়া ‘জয়যাত্রা’ টেলিভিশন হিসেবে গ্রহণ যোগ্য হতে পারে না।

এর আগে ১৪ মার্চ ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২০ মার্চ দিন ধার্য করেন।

২০২১ সালের ২ আগস্ট রাতে পল্লবী থানায় সাংবাদিক আব্দুর রহমান তুহিন বাদী হয়ে একটি প্রতারণার মামলা করেন। মামলায় জয়যাত্রা টিভির চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীর, জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কো-অর্ডিনেটর সানাউল্ল্যাহ নূরী, স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ারসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়।

আরও পড়ুন: গুলশান-লেডিস-বোটসহ ১২ ক্লাবের সদস্য হেলেনা জাহাঙ্গীর

মামলার বাদী তুহিন অভিযোগ করেন, জয়যাত্রা টিভির স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ভোলা জেলার আবদুর রহমান তুহিনের কাছ থেকে ৫৪ হাজার টাকা নেন হেলেনা। প্রতিবেদক হিসেবে রহমান কয়েক মাস কাজ করলেও কোনো বেতন পাননি। অন্যদিকে তার কাছ থেকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা নেয় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ।

তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইড) পরিদর্শক শাহিনুর ইসলাম অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন তোফাজ্জল হোসেন দণ্ডবিধি ৪২০/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় আদালতে সাক্ষ্য দেন ১৩ জন।

জেএ/জেডএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।