কেমন যাবে নতুন বছর
ট্রাম্পের অভিবাসী ফেরত অভিযান আরও জোরালো হবে?
২০২৬ সালে ট্রাম্পের অভিবাসী ফেরত অভিযান আরও জোরালো হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সব অবৈধ অভিবাসীকে এক বছরের মধ্যেই ফেরত পাঠানো হবে—এমন ধারণা শুরু থেকেই বাস্তবসম্মত ছিল না। লাখ লাখ মানুষকে শনাক্ত, আটক ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিতে যে অর্থ ও জনবল প্রয়োজন, তা জোগাড় করতে সময় লাগাই স্বাভাবিক।
তবে ক্ষমতার প্রথম বছরেই ট্রাম্প সেই অভিযানের ভিত্তি গড়ে তুলেছেন। ২০২৬ সালে ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’ থেকে বরাদ্দ পাওয়া অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে আরও অভিবাসন কর্মকর্তা নিয়োগ, আটককেন্দ্র সম্প্রসারণ, নির্বাসন ফ্লাইট এবং নজরদারি প্রযুক্তি জোরদার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কৌশল এরই মধ্যে স্পষ্ট। নির্বাসনের অপেক্ষায় থাকা অভিবাসীদের রাখার জন্য পুরোনো কারাগার ফের চালু করা এবং নতুন কারাগার নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। ফ্লোরিডার ‘অ্যালিগেটর আলকাট্রাজ’ কিংবা টেক্সাসের একটি সামরিক ঘাঁটিতে স্থাপিত অস্থায়ী তাঁবু শিবিরের মতো ব্যবস্থাও আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব অস্থায়ী আটককেন্দ্রে নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করার যে তদারকি সংস্থাগুলো ছিল, তাদের ক্ষমতা কার্যত কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে লোকসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার পরিবেশ আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন>>
যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকত্ব পাওয়া অভিবাসীরাও এখন ‘নিরাপদ নয়’
অভিবাসী আটক করলে পুলিশ সদস্যদের হাজার ডলার বোনাস দেবেন ট্রাম্প
ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী কমেছে ১০ লাখেরও বেশি
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের কারণে কি সত্যিই অপরাধ বাড়ছে?
নির্বাসন কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংস্থা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বা আইসিই নতুন করে জনবল নিয়োগ দিচ্ছে। ‘স্যাংচুয়ারি সিটি’ হিসেবে পরিচিত লস অ্যাঞ্জেলেস ও শিকাগোর মতো শহরে আরও বেশি আইসিই এজেন্ট মোতায়েনের প্রস্তুতি রয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট যে সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে, তার ফলে ডেমোক্র্যাট-শাসিত এলাকায় অভিযান ও রাস্তায় নির্বিচার গ্রেফতারের ঘটনাও বাড়তে পারে। একই সঙ্গে আইসিই এজেন্ট ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কাও রয়েছে।
তবে ব্যাপক নির্বাসনই ট্রাম্প প্রশাসনের একমাত্র লক্ষ্য নয়। সীমান্তে আশ্রয় আবেদন কার্যত বন্ধের উদ্যোগ এবং সেখানে সেনাবাহিনীর শক্ত উপস্থিতি নতুন করে অভিবাসীদের প্রবেশ নিরুৎসাহিত করছে। পাশাপাশি, কঠোর আবেদনপ্রক্রিয়া ও নতুন ফি আরোপের কারণে বৈধ অভিবাসনও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পরীক্ষার মুখে ট্রাম্প
এই কঠোর নীতির মধ্যেই ট্রাম্পকে অবস্থান শিথিল করতে বাধ্য করতে পারে এমন দুটি বিষয় সামনে এসেছে।
প্রথমত, ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য বলছে, আইসিই অভিযানের ভয়ে অনেক শ্রমিক কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন। কৃষি ও হোটেল খাতের মালিকেরা শ্রমিক সংকটের আশঙ্কা প্রকাশ করলে ট্রাম্প কিছুটা সহানুভূতিশীল মনোভাব দেখান। তবে প্রকাশ্যে সমালোচনার বদলে ব্যবসায়ী মহল হয়তো ব্যক্তিগত যোগাযোগের পথই বেছে নেবে। অন্যদিকে প্রশাসনের ভেতরে অভিবাসন বিষয়ে কঠোর অবস্থানের প্রবক্তারা প্রেসিডেন্টকে নীতি অব্যাহত রাখতে চাপ দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত তাদের অবস্থানই প্রাধান্য পাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের প্রতি জনসমর্থন দ্রুত কমছে। অপরাধে জড়িত অভিবাসীদের নির্বাসনে মার্কিনিরা সমর্থন দিলেও, মুখোশধারী এজেন্টদের হাতে মানুষকে অচিহ্নিত গাড়িতে তুলে নেওয়ার দৃশ্য জনপ্রিয় নয়। আসন্ন নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচন এই নীতির বড় পরীক্ষা হয়ে উঠবে। পুনর্নির্বাচনের মুখে থাকা রিপাবলিকান প্রার্থীরা নির্বাসন প্রশ্নে কতটা আক্রমণাত্মক অবস্থান নেন, এবং ভোটাররা তাতে সাড়া দেন কি না—সেদিকেই এখন নজর।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
কেএএ/
টাইমলাইন
- ০৪:১৪ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ট্রাম্পের অভিবাসী ফেরত অভিযান আরও জোরালো হবে?
- ০৫:৪৭ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ মধ্যপ্রাচ্যে ভালো-মন্দের মাঝে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
- ১২:৪৭ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০২৬ সালেই এআই’র আসল প্রভাব দেখতে পাবে বিশ্ব
- ০৫:৪৭ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০২৬ সালে বিশ্বকে বদলে দিতে পারে যে ১০ বিষয়
- ০৪:৪৬ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ যুক্তরাষ্ট্রের অনিশ্চয়তায় এশীয় দেশগুলোকে আরও কাছে টানবে চীন