রাজস্ব আদায়

নিরীক্ষার এখতিয়ারসহ সিএজি’র কার্যকারিতা নিশ্চিতে টিআইবির প্রস্তাব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৭ পিএম, ২৪ মার্চ ২০২৫
ফাইল ছবি

‘পাবলিক অডিট বিল-২০২৪’ খসড়ায় রাজস্ব নিরূপণ ও আদায়ের নিরীক্ষা এবং সিএজি কার্যালয়ের প্রাধান্য ও কার্যকারিতা নিশ্চিতের বিধান অন্তর্ভুক্ত করতে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সোমবার (২৪ মার্চ) টিআইবি’র পক্ষ থেকে সুপারিশমালা অন্তর্বর্তী সরকারের বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, টিআইবি’র সুপারিশ মূলত- জাতীয় রাজস্ব ও প্রাপ্তির নিরীক্ষার এখতিয়ার, নিরীক্ষাধীন সব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর দায় ও জবাবদিহি, সিএজির নিজস্ব জনবল নিয়োগের এখতিয়ার এবং বিধি প্রণয়নের ওপর।

অর্থ মন্ত্রণালয়সহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান, একটি দাতা সংস্থা এবং বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মধ্যে আবদ্ধ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ‘পাবলিক অডিট বিল-২০২৪’ এর খসড়া চূড়ান্তকরণের উদ্যোগের সমালোচনা করে জনস্বার্থে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের জন্য অবিলম্বে উন্মুক্ত করতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আহ্বান জানিয়েছিল টিআইবি।

এরপর খসড়া অধ্যাদেশটি টিআইবির হাতে এলে তার ওপর তারা সুনির্দিষ্ট পাঁচটি সুপারিশ করছে। এর মধ্যে রয়েছে, ধারা ৭ এ- উল্লেখিত রাজস্ব ও প্রাপ্তি সংক্রান্ত অডিট বিষয়ে সরকারি হিসাবসমূহে প্রাপ্য সব রাজস্ব ও প্রাপ্তি অর্থাৎ সংযুক্ত তহবিলের প্রাপ্তিসমূহ (কর এবং কর-ব্যতীত রাজস্ব ইত্যাদিসহ) প্রযোজ্য আইন, বিধি ও পদ্ধতি অনুযায়ী যথাযথভাবে নিরূপণ ও আদায় এবং সঠিকভাবে জমা ও হিসাবভুক্ত হয়েছে কি না, প্রাপ্তিসমূহ প্রযোজ্য আইন, বিধি ও পদ্ধতি অনুযায়ী যথাযথ কি না তা মহাহিসাব নিরীক্ষক অডিট করতে পারবেন- এই মর্মে বিধান রাখার আহ্বান। এছাড়া, অর্থ বিভাগের প্রস্তাবে ধারা ৫ এ- নিরীক্ষাধীন প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর তথ্য প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা বিষয়ে দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

টিআইবির অন্য সুপারিশমালায় রয়েছে- মহাহিসাব নিরীক্ষক কর্তৃক গঠিত স্বতন্ত্র তদারকি কমিটিতে সংশ্লিষ্ট খাতের নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা, এই স্বতন্ত্র তদারকি কমিটি তাদের প্রতিবেদন জাতীয় সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিকে প্রদান করবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করবে, মহাহিসাব নিরীক্ষক কার্যালয়ের সব জনবল মহাহিসাব নিরীক্ষক দ্বারা নিযুক্ত হবেন এবং নিজস্ব মানবসম্পদ নীতিমালা অনুসারে পরিচালিত হবে, এ ধরনের বিধান নিশ্চিত করা।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের ধারা-৭ এ রাজস্ব নিরূপণের যথার্থতা নিরীক্ষার সুযোগ না রাখার ফলে পুরো সরকারি রাজস্ব নিরূপণ ও আদায় সংক্রান্ত বিষয় জবাবদিহির বাইরে থেকে যাবে।’

উচ্চ আদালতের সংশ্লিষ্ট রায় ও এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইন ও আন্তর্জাতিক, বিশেষ করে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশের চর্চার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কর ফাঁকির অন্যতম উপায় কর কর্মকর্তাদের একাংশের সঙ্গে অসাধু করদাতাদের যোগসাজশের মাধ্যমে প্রতারণামূলক রাজস্ব নিরূপণ, যার অসংখ্য দৃষ্টান্ত বিভিন্ন সময়ে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রকাশিত হয়েছে। যা নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে, বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাতের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির অন্যতম কারণ যোগসাজশের করফাঁকি। এ থেকে উত্তরণের জন্য রাজস্ব নিরূপণ নিরীক্ষাভুক্ত করা অপরিহার্য। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার কোনো প্রকার অনৈতিক চাহিদা বা চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’

বিবৃতিতে সিএজি কার্যালয়ের দায়িত্ব পালনে নিরীক্ষাধীন প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তথ্য প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতার বাধ্যবাধকতা ও ব্যত্যয়ের ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং উক্ত অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিধি প্রণয়নের এখতিয়ার সিএজির ওপর ন্যস্ত করার বিধান সংযুক্ত করার আহ্বান জানায় টিআইবি।

এসএম/ইএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।