৭ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ সিআইডির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪২ এএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতীকী ছবি

পিরোজপুরে প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত ১০১ কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি পাচার চক্রের ৭ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।

বৃহস্পতিবার (১১ডিসেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জসীম উদ্দিন খান বলেন, পিরোজপুরে ২০০৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে প্রতারণার মাধ্যমে ১০১ কোটি ৪৫ লাখ ৯৪ হাজার ২৩৮ টাকা সংগ্রহ ও অর্থপাচারের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড এবং এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের পরিচালক ও তার স্ত্রীসহ প্রতিষ্ঠান দুইটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা তাদের নিকট আত্মীয়-স্বজনসহ মোট ৭ জন ব্যক্তি ও ২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এবং ‘এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড’ ২০০৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত নিজেদের বৈধ আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতো। তারা উচ্চ মুনাফার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরাসরি বাড়ি-বাড়ি গিয়ে, স্থানীয় সভা-সমাবেশে এবং এজেন্টদের মাধ্যমে বিনিয়োগের নিমিত্তে টাকা সংগ্রহ করতো। এই সময়ে প্রতিষ্ঠান দুটি পিরোজপুর, বরিশাল ও আশপাশের এলাকার সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী এবং প্রবাসীদের পরিবারের কাছ থেকে অর্থ উত্তোলন করেছিল। বিনিয়োগকারীদের উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে তারা স্থানীয় মসজিদ, স্কুল ও মাদ্রাসা থেকেও টাকা নিয়েছে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এই সময়ে চক্রটি মোট ১০১ কোটি টাকার বেশি অর্থ গ্রহণ করে, পরবর্তীতে তারা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জনসহ পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে।

তিনি বলেন, পরিচালক রাগীব আহসান ও তার স্ত্রী সালমা আহসান ২০০৮ থেকে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করে বিনিয়োগে উচ্চ মুনাফার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্থানীয় ও প্রবাসীসহ মোট ১ হাজারেরও বেশি মানুষের কাছ থেকে বিনিয়োগের নামে অর্থ সংগ্রহ করেছেন। এই দম্পতির সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে আবুল বাশার খান, খায়রুল ইসলাম, শামীম হাসান, মাহমুদুল হাসান ও মো. নাজমুল ইসলাম এই অর্থ সংগ্রহ ও স্থানান্তরের কাজে সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে তদন্তে উঠে আসে।

সিআইডির এই বিশেষ পুলিশ সুপার জানান, ভুক্তভোগীরা প্রতিষ্ঠান দুইটির মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়ে পিরোজপুর সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় প্রায় শতাধিক মামলা দায়ের করেছেন। সিআইডি এরকম প্রায় ১০০ মামলা পর্যালোচনা করে। প্রাথমিকভাবে এসব অভিযোগের সত্যতা পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পিরোজপুর সদর থানায় মামলা করে। দীর্ঘ তদন্ত কার্যক্রম শেষে এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ৭ জন- রাগীব আহসান (৪০), মো. আবুল বাশার খান(৩৫), খায়রুল ইসলাম (৩৫), শামীম হাসান (৩৭), মো. মাহমুদুল হাসান (৩১), সালমা আহসান (৩২), ও মো. নাজমুল ইসলাম এবং ২ টি প্রতিষ্ঠান এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. ও এহসান রিয়েল এস্টেট এন্ড বিল্ডার্স লি. এর বিরুদ্ধে সিআইডি অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। বিচারার্থে সোপর্দ অভিযুক্তরা বর্তমানে হাজতবাসে আছে।

রাষ্ট্রের অর্থপাচারে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে আইনের আওতায় আনা এবং রাষ্ট্রের আর্থিক স্বার্থ সংরক্ষণে সিআইডির এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

কেআর/এএমএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।