ফ্রেঞ্চ শিপন পরি না, তাঁতের শাড়ি পরি : প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত: ১২:৪৫ পিএম, ১৯ মার্চ ২০১৭

‘আমি ফ্রেঞ্চ শিপন শাড়ি পরি না। বাংলাদেশে তৈরি, আমার দেশের তাঁতীদের তৈরি কাপড়ই সব সময় ব্যবহার করি।’

কথাগুলো আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। রোববার রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ তাঁতী লীগের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।

নিজের ও পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত কাপড় প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সুতির কাপড় হোক, সিল্কের কাপড়, এমন কী খদ্দরের; সব সময় দেশের তৈরি কাপড় ব্যবহার করি। এছাড়া বিদেশে যত উপহার পাঠাই, সব তাঁতের শাড়ি। এমন কী আমার ছেলে-মেয়েদেরও উন্নতমানের খদ্দরের কাপড় কিনে দেই, পাঞ্জাবিও কিনে দেই; তারা সেগুলো পরে।’

‘আমরা নারীরা তাঁতীদের শাড়ি পরি’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা পুরুষদেরও তাঁতীদের বোনা কাপড় ব্যবহার করা উচিত বলে মন্তব্য করেন। বলেন, ‘আমার তো মনে হয় ছেলেরাও শার্ট, পাঞ্জাবি তৈরিতে তাঁতীদের কাপড় ব্যবহার করতে পারে। এগুলো দেখতেও সুন্দর।’

তাঁতীদের কেউ যেন অবহেলা করতে না পারে সেজন্য নেতাদের নজর রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা নেতা নির্বাচিত হবেন তারা শুধু নেতা হয়ে বসে থাকবেন না, তাঁতী সম্প্রদয়ের উন্নয়নে কাজ করবেন। তাঁতশিল্পে কোথায় কী সমস্যা আছে তা খুঁজে বের করবেন। এ শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে আমরা সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাঁতশিল্পকে আধুনিক, বহুমুখীকরণ এবং এর প্রসারে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ শিল্প যেন আরও উন্নত হয়, সম্প্রসারিত হয়, সেদিকেই আমরা নজর দিচ্ছি।’ তাঁতীদের সন্তানরা যেন লেখাপড়ার সঙ্গে ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে পারে সেদিকেও বিশেষ দৃষ্টি দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মসলিনের ওপর চার ইঞ্চি জরির কাজ করতে পুরোটা দিন লেগে যায়। তারা মনোযোগ দিয়ে একটি বস্ত্র তৈরি করছেন, এটাও তো অত্যন্ত উন্নতমানের শিল্প। কাজেই এটাকে আরও বেশি সহযোগিতা করার জন্য আমাদের সরকার সব সময় প্রস্তুত এবং আমরা তা করে যাব। মসলিন কাপড়ের সুতা কোন কোন এলাকায় পাওয়া যেত তা খতিয়ে দেখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের তাঁতশিল্পের কাপড় শুধু পরিধান নয়, গৃহে নানামুখী কাজেও ব্যবহারের সুযোগ আছে। আমি আশা করবো, সকলে সেদিকে নজর দেবেন। কাজেই তাঁতশিল্পকে আমরা আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে চাই।’

আওয়ামী লীগের অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিটি সংগঠনকে নীতি-আর্দশ মেনে চলারও নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তাঁতী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাধনা দাস গুপ্তা। প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক খগেন চন্দ্র দেবনাথ সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন। শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলী।

সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন তাঁতী লীগের আহ্বায়ক এনায়েতুর রহমান চৌধুরী। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিকেল ৩টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করা হয়। এর আগে, প্রধানমন্ত্রী বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। তিনি সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের সকল শহীদ, কারাগারে নিহত জাতীয় চারনেতা, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং গণতন্ত্র উদ্ধারে আত্মাহুতি দেয়া তাঁতী লীগের প্রয়াত নেতৃবৃন্দের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এফএইচএস/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।