কনডেম সেল থেকে ঐতিহাসিক ফাঁসির মঞ্চ (ভিডিও)


প্রকাশিত: ০৭:২৪ এএম, ২২ মার্চ ২০১৭

কারাগারের একমাত্র গেট দিয়ে ঢুকতেই সরু রাস্তা। দুদিকে বিভিন্ন সেল। সোজা ৫০ গজ হেঁটে যেতেই বাম পাশে  চোখে পড়বে আরেকটি লোহার গেট আর শক্ত নিরাপত্তা বেস্টনি। ইট বিছানো পথ কিছু দূর হাঁটলেই হাতের বাম দিকে ছোট ছোট আটটি গেট। আর ডানেই রয়েছে নাজিমউদ্দীন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ঐতিহাসিক ফাঁসির মঞ্চ।

এই মঞ্চেই ফাঁসি কার্যকর হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাঁচ খুনি বজলুল হুদা, আর্টিলারি মুহিউদ্দিন, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহারিয়ার রশিদ খান ও ল্যান্সার মহিউদ্দিন আহমেদের। এখানেই ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছে যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান, মতিউর রহমান নিজামী, সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদদের।

বুধবার সকালে কারা কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ফাঁসির মঞ্চ ও কনডেম সেলটি কিছুক্ষণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। তবে সর্বসাধারণ এখনই এ মঞ্চের কাছে যেতে পারবেন না।

ব্রিটিশ আমলের ঐতিহাসিক এ কারাগারের ফাঁসির মঞ্চটি খোলা আকাশের নিচে অবস্থিত। তবে ফাঁসি কার্যকরের সময় উপরে শামিয়ানা (প্যান্ডেল) টানিয়ে নেয়া হয়। একসঙ্গে দুজনের ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা রয়েছে মঞ্চটিতে। মঞ্চ বেষ্টিত জায়গাটির আয়তন প্রায় সাড়ে পাঁচ থেকে ছয়শ বর্গফুট।

fasi

মাটি থেকে ৮ ফুট উপরে মঞ্চটি অবস্থিত। মঞ্চে ওঠার জন্য দুদিকের জায়গা ঢালু রাখা হয়েছে। মঞ্চে রয়েছে লোহার দুটি বড় পাত আর একটি লিভার। লিভার টান দিতেই আসামির পায়ের নিচ থেকে সরে যাবে পাতগুলো। আসামিদের ফাঁসিতে ঝোলানোর জন্য মঞ্চের নিচে আনুমানিক ১০-১২ ফুটের মতো গভীরতা রাখা হয়েছে। মঞ্চের বাম পাশে একটি বাল্ব লাগানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে ফাঁসি কার্যকরের সময় অস্থায়ীভাবে আরও আলোর ব্যবস্থা করা হতো।

ফাঁসির মঞ্চের পাশেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের থাকার আটটি কনডেম সেল। কনডেম সেল থেকে মঞ্চের দূরত্ব প্রায় ২০ গজ। কনডেম সেলগুলোর বাইরে উঠানের মতো খালি জায়গা রয়েছে। তবে ভেতরে ভেন্টিলেশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। সেলের ভেতরেই একটি প্যান (টয়লেট) বসানো রয়েছে।

কারা অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এ কারাগার স্থানান্তরের শেষ দিকে ৩ নম্বর কনডেম সেলে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও ২ নম্বর সেলে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ থাকতেন।

২৫-২৭ মার্চ জেলখানার ভেতরে তিন দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। পরিধি ছোট হওয়ার কারণে জনসাধারণের জন্য এখনই মুক্ত হচ্ছে না মঞ্চ ও কনডেম সেল। তবে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, ভবিষ্যতে এ বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে।

এআর/এআরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।