‘এখনো বিল্ডিং দেখলে ভয় পাই’


প্রকাশিত: ০১:৩০ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০১৫
ফাইল ছবি

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার দুই বছর অতিবাহিত হলেও এখনো বড় ব্লিডিং দেখলে এবং জোরে শব্দ শুনলে ভয় পান জেসমিন। ওই  দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যাওয়ায় এখনো ভয় তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাকে। গত দুই বছরে তেমন কোনো সাহায্য না পাওয়া জেসমিন এখনো সুস্থ হতে পারেননি।

রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে রানা প্লাজার এই দুর্ঘটনার দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘রানা প্লাজা ট্রাজেডির দুই বছর পূর্তি:  সতর্কতার জায়গা ও পূর্ণগঠন প্রক্রিয়া’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও সাহায্য না পাওয়ার কথা জানিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জেসমিন আরো বলেন, ২০১০ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর রানা প্লাজায় চাকরি নেই। ঘটনার দিন সকালে বাচ্চাকে রেখে অফিসে যাই। যাওয়ার পরই দুর্ঘটনা ঘটলে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। আমি দুইদিন বিডিংয়ের নিচে চাপা পরে ছিলাম। দুইদিন পর বিল্ডিং থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ৬ দিন পর সিএইচএম-এ নেওয়ার পর নিজেকে অনুভব করি। ৬ মাসের চিকিৎসার পরও পুরোপুরি সুস্থ না হতেই হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিয়ে দেয়। কোনো কাজ করতে পারছি না। এখনো প্রতিমাসে চার থেকে পাচঁ হাজার টাকার ওষুধ প্রয়োজন।

টাকার অভাবে তা কিনতে পারেন না বলে জানান তিনি। ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় আক্ষেপ করে জেসমিন বলেন, লোকের মুখে শুনি আহতদের জন্য অনেক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। তবে যোগাযোগ করে দেখি সবার পাওয়ার খাতা খালি।

তবে হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালে বিলস থেকে বিকাশের মাধ্যমে তাকে ৫০ হাজার টাকা এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আরও ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

সেই দিনের ঘটনায় পঙ্গু হওয়া আরেক শ্রমিক বরিশালের মরিয়ম জানান, ৫ম তলায় কাজ করতাম। বিল্ডিং ভেঙে গেলে পঙ্গু হয়ে যাই। ৪ মাস চিকিৎসার পর বাড়ি চলে যাই। ক্ষতিপূরণের জন্য বিলস থেকে ৩০ হাজার টাকা পেয়েছি। ব্র্যাক থেকে কিছু সাহায্য নিয়ে ছোট্ট একটা দোকান দিয়েছে।

রানা প্লাজায় স্বামী হারানো মনোয়ারা বেগম জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর মরদেহ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা পেয়েছি। এরপর নানা জায়গায় ঘুরে আজও কোনো টাকা পাইনি। দুই থেকে তিনবার ব্যাংকে একাউন্ট করেছি। একাউন্ট করতে খরচ হয়েছে। খুব কষ্টে জীবন কাটছে। জানি না সামনে কি অপেক্ষা করছে।

সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মিখাইল সিপার, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদিসহ বিশিষ্ট নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এসআই/একে/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।