জেলহত্যা দিবস পালনে কারা অধিদফতরের প্রস্তুতি
পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। ভেতরে জাতীয় চার নেতার স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত স্মৃতি গ্যালারির প্রবেশপথের পাশের বেদিতে বসে এক রঙ মিস্ত্রি তুলিতে লাল রঙ মিশিয়ে কাজ করছিলেন। ঠিক তার পাশেই তামার ফলকে লেখা, ‘জাতীয় চার নেতার মৃতদেহ হস্তান্তরের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এখানেই রাখা হয়েছিল।’
শহীদ চার নেতার দেহ রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল তা বোঝাতেই বেদিতে কৃত্রিম রক্তের ছোপ অাঁকছিলেন রঙ মিস্ত্রি। বুধবার বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টায় পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।

আগামীকাল ৩ নভেম্বর (শুক্রবার) জেলহত্যা দিবস। বাঙালি জাতির কলঙ্কময় একটি দিন। ১৯৭৫ সালের এ দিনে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সহচর ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন (অব.) এম মুনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এ দিনটিতে চার নেতার পরিবার পরিজনরা স্মৃতি গ্যালারিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। স্মৃতি গ্যালারির বাইরে আঙ্গিনায় চার নেতার প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে। সামনে এগিয়ে গেলে পাশাপাশি তিনটি কক্ষে জাতীয় চার নেতার ব্যবহৃত কাঠের চৌকি, টেবিল চেয়ার ও অন্যান্য নিত্য ব্যবহার্য় দ্রব্যাদি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এদিন চার নেতার স্মৃতি গ্যালারি ছাড়াও অদূরেই বঙ্গবন্ধু স্মৃতি গ্যালারি পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শনে যান।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে জাতীয় চার নেতা স্মৃতি জাদুঘর ও বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে নতুনভাবে রং করা ও ধোয়া মোছা চলছে। ২০১৬ সালের ২৯ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এখান থেকে কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরিত হয়। জেল হত্যা দিবসকে সামনে রেখে গত দুই-তিন দিন যাবত ময়লা আর্বজনা পরিষ্কার ও গাছ রং করার কাজ চলছে।

কারা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জাতীয় চার নেতার পরিবার আগামীকাল পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসবেন। এ কারণে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
এমইউ/ওআর/আইআই