কীভাবে ত্রাণ দিতে হয় লাইভে বললেন ব্যারিস্টার সুমন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০৭ পিএম, ০৪ এপ্রিল ২০২০

করোনাভাইরাস সংকটকালে ত্রাণসামগ্রী বিতরণে নেতানেত্রীদের অজ্ঞতা আছে উল্লেখ করে ফেসবুক লাইভে কথা বলেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন।

শনিবার (৪ এপ্রিল) হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় তার নিজ এলাকায় তরুণদের উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

লাইভে সুমন বলেন, পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি। সবাইকে শুভেচ্ছা, আজ এমন একটি বিষয় নিয়ে দাঁড়িয়েছি সমস্যা সবার এক রকম করোনাভাইরাস। আপনারা বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ সহযোগিতা দিচ্ছেন। ভিডিওটা এ জন্য করা করোনায় ত্রাণ কীভাবে দিতে হয় সেটি এদের কাছ থেকে শিখতে হবে।

ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন বলেন, বাংলাদেশ বড় বড় দায়িত্বপ্রাপ্ত যারা আছেন তারাও জানেন না করোনার মধ্যে ত্রাণ কীভাবে দিতে হয়। আশ্চর্য বিষয় হলো আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি এখানে ত্রাণসহ সর্বমোট ৭ থেকে ৮ জন লোক আছে। এতগুলো খাবার কোনো মানুষ নাই।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, যেখানে ত্রাণ দেবেন, মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেখানে লাইন ধরিয়ে বাজারের মতো লোক বানিয়ে ত্রাণ দেন। এদের আসলে করোনা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। এ সকল লোককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এই জন্য যে তারা লিস্ট করছে যে গাড়ি করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণসামগ্রী দিয়ে আসবে।

তিনি বলেন, আশ্চর্য লাগে যে আমাদের অনেক মন্ত্রীও বোঝেন না, মেয়ররাও বোঝেন না করোনা হলে সবাইকে দূরে রেখে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ দিতে হয়। প্রকৃতপক্ষে যদি মানুষের সেবা করতে চান, সেবা কম বা বেশি করেন, মানুষের ক্ষতি করতে পারে না। ত্রাণ দেয়ার নামে আপনি লাইনে দাঁড়িয়ে যদি করোনায় আরও বিস্তার লাভ করান। আপনি ভালো করতে গিয়ে উল্টো দেশের ক্ষতি করলেন।

তিনি বলেন, পওর এবং অরফান ফাউন্ডেশনের বাচ্চা ছেলেরা আসামপাড়ার বাল্লা চুনারুঘাট উপজেলার ছেলেরা যাই দিচ্ছে তাদের কনসেপ্টটা দেখেন। একটা বাইরের মানুষ এরা রাখেন নাই। আমি দূরে আছি দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলছি।

তিনি জুয়েল নামের একজনকে ডেকে বলেন, আপনি আপনার ত্রাণ বিতরণের বিষয়ে বলুন। জুয়েল বলেন, চারজনের উদ্যোগে ১২ জনের সহযোগিতায় ত্রাণ দেয়া শুরু করেছি। পরে প্রবাসীরাও আমাদের সহযোগিতা করেছেন। এছাড়াও আমরা রমজান মাসে ইফতার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে থাকি।

এরপর আবার ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন বলেন, আপনি একটা বাচ্চা মানুষ হিসেবে বলবেন, এমন একটা যুদ্ধের ময়দানে দেশের অন্যান্যরা যে আছে তাদের ভূমিকাটা কী হবে?

তিনি বলেন, ভিডিও থেকে বিদায় নেয়ার আগে একটা কথা বলতে চাই যে, ভাইরাসের মুখোমুখি আমরা হয়েছি। যে ভাইরাসকে দেখতে পাওয়া যায় না। আমরা চিন্তাও করতে পারিনি যে বাংলাদেশের মানুষের জীবনে এমন একটা বিপদ আসবে। যে বিপদে আপনজনকেও পাশে রাখতে পারছি না।

তিনি বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জীবনে এমন কোনো অসুখের কথা শুনি নাই যে, অসুখ হলে আপনজনের কাছ থেকে দূরে চলে যেতে হয়। এ রকম বিপদের মুখে একাত্তর সালে যে যুদ্ধ হয়েছিল এই স্থানে সবচেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধা ছিল। এই ছেলেরা তাদেরই উত্তরসুরী। তারাও মুক্তিযোদ্ধা।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, এই ভিডিওটা যে সকল নেতৃবৃন্দ দেখছেন, আপনারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ দেয়ার চেষ্টা করবেন। আস্তে আস্তে ত্রাণ দিয়ে সরকারের ইনস্ট্রাকশন, পুলিশের ইনস্ট্রাকশন মেনে চলবেন।

তিনি বলেন, আমরা এমন একটা শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছি, কে মরবে কে বাঁচবে তা জানি না। শুধু বাংলাদেশে একা না সারা পৃথিবী আজ এই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ছে। আমি বিদায় নেয়ার আগে এই ফাউন্ডেশনের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ভাষণে বলেছিলেন- যার যা কিছু আছে তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ো, আর এই যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করেছি। করোনার এই যুদ্ধে আমরা যে যা পারি তা দিয়ে সহযোগিতা করব।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, বাঁচতে হলে সবাইকে নিয়ে বাঁচব মরতে তো হবেই।

এফএইচ/বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।