লে-অফ ঘোষণা করলে ৫০০০ কোটি টাকার তহবিল থেকে সুবিধা নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৪১ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২০

করোনাভাইরাস মহামারির জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল থেকে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে মাত্র দুই শতাংশ সার্ভিসচার্জে ঋণ পাচ্ছে তৈরি পোশাকসহ রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান। তবে এ পরিস্থিতিতে যদি কোনো প্রতিষ্ঠান লে-অফ ঘোষণা করে তবে সেই প্রতিষ্ঠান এ তহবিল থেকে ঋণ পাবে না।

৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে ঋণ বিতরণে এসব নির্দেশনা দিয়ে রোববার (১৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট চিঠি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে সচল রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা প্রদানের লক্ষ্যে ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ সুবিধা প্রদানের বিষয়ে অর্থ বিভাগের মতামত হচ্ছে-

>> যে সব শিল্প প্রতিষ্ঠান ৮০ শতাংশের অধিক সরাসরি পণ্য রফতানি করে থাকে তাদের এলসি পরীক্ষা সাপেক্ষে কেবলমাত্র শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের লক্ষ্যে গঠিত ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল হতে ঋণ প্রদান করা যাবে। তবে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান যদি লে-অফ ঘোষণা করে তাহলে ওইসব প্রতিষ্ঠান এ তহবিল থেকে ঋণ পাবে না।

>> ৮০ শতাংশের কম বিবেচিত রফতানিকারকরা ২০ হাজার কোটি টাকার ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল থেকে এসব প্রতিষ্ঠান ঋণ নিতে পারবে। যা দিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের শ্রম আইনের ভাষায়, লে-অফ হলো কোনো কারখানায় কাঁচামালের স্বল্পতা, মাল জমে যাওয়া কিংবা যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় শ্রমিককে কাজ দিতে না পারার অক্ষমতা প্রকাশ করা। শ্রম আইন অনুযায়ী, লে-অফ চলাকালে প্রথম ৪৫ দিনের ক্ষেত্রে পূর্ণকালীন শ্রমিকের মোট মূল মজুরি, মহার্ঘ ভাতার অর্ধেক দিতে হয় মালিককে। পরের ১৫ দিনের জন্য শ্রমিক পাবে পাবে ২৫ শতাংশ মূল বেতন এবং বাড়ি ভাড়া।

এদিকে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্যাকেজ থেকে উৎপাদনের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ পণ্য রফতানি করছে এমন সচল প্রতিষ্ঠান সুদবিহীন সর্বোচ্চ দুই শতাংশ হারে সার্ভিসচার্জ দিয়ে ঋণ নিতে পারবে। তবে এ ঋণ দিয়ে শুধুমাত্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে। কোনোভাবেই কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা প্রদান করা যাবে না। একইসঙ্গে এ বেতন সরাসরি শ্রমিকের ব্যাংক বা মোবাইল অ্যাকাউন্টে দিতে হবে।

এছাড়া গত ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোট পাঁচটি ঋণ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন যার মধ্যে প্যাকেজ-২ এর আওতায় ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য স্বল্প সুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে মোট ২০ কোটি টাকার সংস্থান রয়েছে। ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ তহবিল থেকে শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ প্রদান করা হবে। এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে নয় শতাংশ। প্রদত্ত ঋণের চার শতাংশ ঋণগ্রহীতা শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট পাঁচ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে প্রদান করবে।

এমইউএইচ/এমএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।