মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে যা বললেন সুমন বেপারী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৪৩ পিএম, ৩০ জুন ২০২০

বুড়িগঙ্গায় লঞ্চ ডোবার ঘটনাস্থলে ভেসে ওঠা সুমন বেপারী স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে ভর্তি আছেন। মঙ্গলবার সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হয় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা এই ব্যক্তির।

লঞ্চডুবির ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় পর জীবিত উদ্ধার হওয়া সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘লঞ্চটা সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে যায়। লঞ্চ ছাড়ার পর থেকে আমার চোখে কিছুটা ঘুম ছিল, তখন হঠাৎ দেখি লঞ্চটিতে আরেকটি লঞ্চ ধাক্কা দিয়েছে। এটি ডুবে যাচ্ছে। ধাক্কা দেয়ার পর এক সাইড ডুবে যাচ্ছিল, আমি দৌড়ে লঞ্চের আরেক প্রান্তে গেলাম কিছুক্ষণ পর সেই সাইডও ডুবে গেল।

এরপর আমি ওখানেই ঘোরাঘুরি করছিলাম। আল্লাহ আমাকে কোন জায়গায় রেখেছে আমি নিজেও বলতে পারব না। তবে মনে আছে যে পানির নিচে যাওয়ার পর আমি লঞ্চের একটা রড ধরে ছিলাম।

লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পরই আমি পানির ভেতরে ছিলাম। পরে আল্লাহ আস্তে আস্তে আমাকে একটি জায়গায় নিয়ে আসছে সেখানে কোনো পানি ছিল না। পা পর্যন্ত একটু পানি ছিল, আমি সেই পানি দিয়ে ওজু করেছি এরপর দোয়া-দুরুদ পড়েছি।

আমার শরীরে যে পোশাক ছিল সেটা ভেসে গেছে শুধু গেঞ্জিটা ছিল লঞ্চটি ডোবার পরই আমি আমার গেঞ্জিটা খুলে কোমরে বেঁধে নেই, যাতে হাঁটু পর্যন্ত ঢাকা থাকে।

আমি যেখানে ছিলাম সেখান থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করিনি। চেষ্টা করলে হয়তো বের হতে পারতাম আবার নাও পারতাম। তাই আমি সেখানেই ছিলাম। রাতে আমাকে উদ্ধার করা হয়েছে।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপচারিতায় তিনি বলেন, যতদূর মনে আছে লঞ্চের ইঞ্জিন রুমের পাশের একটি রুমে ছিলেন এবং লঞ্চের চালককে অদক্ষ বলে মনে হয়েছে তার।

মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রাশীদ উন নবী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুমন বেপারী এখন ভালো আছেন, কথাবার্তা বলছেন। তাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে নেওয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, রাজধানীর বাদামতলীর ফল ব্যবসায়ী মো. সুমন বেপারী। বড় ভাইদের সুবাদে ছোট থেকেই ফল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। তবে মুন্সিগঞ্জের নাড়ির টান তাকে তাড়া করে প্রতিনিয়তই। তাই ব্যবসার খাতিরে ঢাকায় সপ্তাহে তিন দিন থাকলেও মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ির আব্দুল্লাহপুরে নিজ বাড়িতে থাকেন চার দিন।

আট ভাই ও এক বোনের সংসারে বাবা ফজল বেপারী মারা যান ছয় বছর আগে। এ সময় তিনি বিদেশে ছিলেন কর্মের তাগিদে। দেশে ফিরে সত্তরোর্ধ্ব মা আমেনা খাতুনকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই আলাদা থাকেন তিনি। অন্যান্য ভাইবোন যার যার সংসার নিয়ে আলাদা।

এআর/এসএইচএস/জেআইএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।