শাহজালালের বহির্গমনে করোনা পজিটিভ যাত্রী বাড়ছে
![শাহজালালের বহির্গমনে করোনা পজিটিভ যাত্রী বাড়ছে](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2019November/airport-20210328131023.jpg)
অডিও শুনুন
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহির্গমনে করোনা পজিটিভ যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। গত দু্ই সপ্তাহে (১৪ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ) বিভিন্ন ফ্লাইটের বিদেশ যাত্রার অপচেষ্টাকালে কমপক্ষে ৩৫ জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়। বিমানবন্দরে কর্তব্যরত স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা দক্ষতার সঙ্গে যাত্রী স্ক্রিনিং ও করোনা সনদ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলে করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত করা সম্ভব হয়। গত ১৪ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন ফ্লাইটে শনাক্তকৃত পজিটিভ যাত্রীর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে (৬, ২, ৪, ৩, ১, ১, ১, ০, ৪, ৩, ৩, ১, ২ ও ৪ জন)।
বিমানবন্দরের নির্ভরযোগ্য দায়িত্বশীল একাধিক সংস্থার কর্মকর্তা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এসব যাত্রীর বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন শহর দুবাই, শারজাহ, জেদ্দা, দাম্মাম ও রিয়াদগামী। তাদের বেশিরভাগই অক্ষরজ্ঞানহীন। তাদের কেউ কেউ করোনা পজিটিভ সনদকে ইতিবাচক রিপোর্ট ভেবে সরল বিশ্বাসে বিমানবন্দরে চলে আসছেন।
কেউ কেউ জালিয়াতি করে করোনা পজিটিভ সনদকে নেগেটিভ বানিয়ে বিমানবন্দর পার হওয়ার অপচেষ্টা করছেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে ধরা পড়ার পর তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সর্বনিম্ন তিন হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে তারা যেন আবারও যেতে পারেন সে জন্য টিকিটের তারিখ পরিবর্তনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে আগের মতো যাত্রী বিদেশে যাচ্ছেন না। ট্যুরিস্ট যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী শ্রমিক, চিকিৎসার্থে কিংবা দেশে কর্মরত সীমিত সংখ্যক বিদেশি যাত্রী বাইরে যাচ্ছেন। একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট গেট দিয়ে তারা প্রবেশ করছেন। প্রথমেই আনসার সদস্যরা তাদের টিকিট ও পাসপোর্ট পরীক্ষা করছেন। তারা সেখানে করোনা সনদ পরীক্ষা করছেন না। অতঃপর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে যাত্রীরা আসছেন। এ সময় করোনা সনদ পরীক্ষার সময় পজিটিভ কিংবা ভুয়া সনদ ধরা পড়ছে।
আনসার সদস্যরা গেটে টিকিট ও পাসপোর্ট পরীক্ষাকালে করোনার সনদে পজিটিভ বা নেগেটিভ দেখে ভেতরে প্রবেশ করতে দিলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ওপর চাপ কমতো বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য বিভাগের ডা. হাসান ফেরদৌস জানান, করোনার সংক্রমণরোধে তারা প্রত্যেক যাত্রীর হেলথ স্ক্রিনিংয়ের পাশাপাশি করোনা সনদ পরীক্ষা করেন। যারা পজিটিভ সনদ নিয়ে আসছেন তাদের বেশিরভাগই মধ্যেপ্রাচ্যগামী যাত্রী ও অশিক্ষিত। করোনা পজিটিভ হয়েও কেন এসেছেন প্রশ্ন করলে তারা বলেন, পজিটিভ মানে তারা ভালো আছেন, তাই এসেছেন।
করোনা পজিটিভ রোগী ধরা পড়লে তারা তাৎক্ষণিকভাবে যাত্রীকে পিপিই পরিধান করিয়ে মোবাইল কোর্টে খবর দেন। ম্যাজিস্ট্রেট এসে তাদের আর্থিক জরিমানা করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠান। করোনার সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্য বিভাগসহ অন্যান্য সব বিমানবন্দর সচেষ্ট ও সজাগ রয়েছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এমইউ/বিএ/এমএস