মার্কেট খোলার প্রথম সকালে মাস্কে নজরদারি নিরাপত্তারক্ষীদের
‘আংকেল, আমারে চিনেন না? আমি দোতলার আলী নুর ভাইয়ের দোকানের। ভুলে মাস্ক আনি নাই। যাইতে দেন।’ রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে পুরোনো নিউমার্কেটের পোস্ট অফিস সংলগ্ন গেটের অদূরে নিউ সুপার মার্কেটে নিরাপত্তারক্ষীর বাধার মুখে এ কথা বলছিলেন দোকান কর্মচারী সুজন। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা বলেন, ‘আপনি যে মালিকের কর্মচারী হন না কেন, মাস্ক ছাড়া ঢুকতে দেয়া হবে না।’
পাশেই এক নারী তার ৭-৮ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে মার্কেটে প্রবেশ করতে যাওয়ার সময় বাধার মুখে পড়েন। মেয়েটির মুখে মাস্ক থাকলেও ওই নারী শাড়ি দিয়ে মুখে মাস্কের মতো করে আটকে রেখেছেন। তাকেও বাইরে থেকে মাস্ক কিনে পরিধান করে তারপর আসতে বললেন ঐ নিরাপত্তারক্ষী।
এ সময় স্রোতের মতো শত শত দোকান কর্মচারীকে মাস্ক পরেই মার্কেটে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
নিরাপত্তারক্ষীরা আলাপকালে জানান, মার্কেট দোকান মালিকদের কড়া নির্দেশ। করোনার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা নিউমার্কেটের ভেতরে মাইক থেকে বার বার ভেসে আসছিল, ‘মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে সরকার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে। এ সময় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কে মাস্ক পরিধান করতে হবে। এছাড়া সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখতে হবে।’
প্রায় তিন সপ্তাহ লকডাউনের কারণে দোকানও শপিংমল বন্ধ থাকার পর আজ রোববার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে মার্কেট খুলতে শুরু করেছে। প্রথম দিনে দোকান ঝাড়ু দেয়াসহ মালামাল গোছানোর জন্য সকাল নয়টা থেকেই মার্কেটে দোকানের কর্মচারীরা আসতে থাকেন। নিরাপত্তারক্ষীদের এ সময় মার্কেটে আগত সকলকে মাস্ক পরিধান করে প্রবেশ করতে অনেকটা বাধ্য করতে দেখা গেছে।
অন্যান্য সময় নিরাপত্তারক্ষীরা এমন কঠোরতা দেখালে দোকানের কর্মচারীরা বাগবিণ্ডা করেন। তবে আজ তাদের অদূরে মাস্কের দোকান থেকে মাস্ক কিনে তবেই প্রবেশ করতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলালউদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, ‘মার্কেটের ব্যবসায়ীরা লকডাউনের কারণে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাই সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল মার্কেট ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিচালনা করবেন।’
প্রথম দিনের সকালে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা গেলেও বেলা গড়ানোর সাথে সাথে কী হয় তা দেখার বিষয় বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
এমইউ/এমএইচআর/এমএস