সংক্রমণ বাড়ছেই, দাপট ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’র
দেশে বিদ্যমান করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ধরনের মধ্যে ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’র প্রাধান্য সুস্পষ্ট। গত মার্চে সিকোয়েন্সকৃত নমুনার ৮২ শতাংশে এ ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
এরপর এপ্রিলে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে সঙ্গে আলফা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের হারও বাড়তে থাকে। গত মে মাসে ৪৫ শতাংশ ও জুন মাসে ৭৮ শতাংশ নমুনায় ভারতীয় ধরন বলে পরিচিত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তে আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি যৌথভাবে পরিচালিত নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিং পরীক্ষায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রাধান্য পাওয়া গেছে।
রোববার (৪ জুলাই) আইইডিসিআর-এর ওয়েবসাইট বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি শীর্ষক ১২তম সংখ্যার বুলেটিনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত মোট ৬৪৬টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। এসব নমুনায় করোনার আলফা ভ্যারিয়েন্ট (যুক্তরাজ্যে প্রথম শনাক্ত), বিটা ভ্যারিয়েন্ট (সাউথ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত), ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট (ভারতে প্রথম শনাক্ত), ইটা ভ্যারিয়েন্ট (নাইজেরিয়াতে প্রথম শনাক্ত) এবং বি ১.১.৬১৮ ভ্যারিয়েন্ট (আন আইডেন্টিফাইড) শনাক্ত হয়।
২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিকোয়েন্সকৃত সব নমুনায় আলফা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। মার্চ মাসের সিকোয়েন্সকৃত ৮২ শতাংশ নমুনায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এবং ১৭ শতাংশ নমুনায় আলফা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়।
গত এপ্রিলে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে সঙ্গে আলফা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের হার বৃদ্ধি পেতে থাকে। গত মে মাসে ৪৫ শতাংশ ও জুনে ৭৮ শতাংশ নমুনায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়।
প্রকাশিত বুলেটিনে বলা হয়, নমুনা পরীক্ষায় পাওয়া ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কিত তথ্য জিনোম সিকোয়েন্সের বৈশ্বিক ডাটাবেজে জমা দেয়া হয়।
তবে যে ধরনের ভ্যারিয়েন্টই হোক না কেন, তা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ একমাত্র উপায়। এর সঙ্গে সঙ্গে টিকা নেয়া প্রয়োজন বলে বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী- গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৫ হাজার ৬৫ জনে।
একই সময়ে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৬৬১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯১৭ জনে।
এর আগে ১ জুলাই সর্বোচ্চ ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়। এরপর ২ জুলাই ১৩২ জন এবং ৩ জুলাই ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সরকারি ও বেসরকারি ৬০৩টি ল্যাবরেটরিতে ২৯ হাজার ৮৭৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৭ লাখ ২৩ হাজার ৫৬০টি।
একদিনে নমুনা পরীক্ষার হিসাবে শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ০৫ শতাংশ।
এমইউ/এএএইচ/জিকেএস