খুলেছে দোকানপাট, বিপণি-বিতান, প্রথমদিনে ক্রেতা কম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫৬ পিএম, ১১ আগস্ট ২০২১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে কঠোর বিধিনিষেধ শেষে ১৯ দিন পর বুধবার (১১ আগস্ট) রাজধানীসহ সারাদেশে সব ধরনের দোকানপাট ও বিপণি-বিতান খুলেছে। প্রথমদিন রাজধানীর বিপণি-বিতানে ক্রেতার উপস্থিতি একেবারে কম। সকালে এক পশলা বৃষ্টি হওয়ায় দোকানপাটে ক্রেতা কম।

সরেজমিনে মৌচাক মার্কেট ও এর আশপাশের বেশ কয়েকটি শপিংমল এবং বেইলি রোডের বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘসময় পরে সবকিছু একসঙ্গে খুলে দেয়ায় মানুষ নানা ধরনের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া সাধারণ মানুষের হাতে টাকা-পয়সা নেই। পাশাপাশি কেনাকাটার জন্য এ সময়টা তেমন কোনো উপলক্ষও নেই। সব মিলিয়ে মার্কেট-বিপণি-বিতানে ক্রেতার আনাগোনা নেই।

market-4.jpg

মৌচাক মার্কেটে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে ব্যবসা করছেন মোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, ‘লকডাউনে যে খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছি, আগে কখনো এমন হয়নি। এখন দোকান খুললেও বিক্রি হচ্ছে না। পূজার অনেক দেরি। দোকানে বেচাকেনা কবে নাগাদ জমবে বলা মুশকিল। অনিশ্চয়তা নিয়েই ব্যবসা করতে হচ্ছে।’

বিধিনিষেধের সময় ১৯ দিন বন্ধ থাকায় তার দোকানে অনেক কাপড় নষ্ট হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি জানান, কিছু কাপড় ইঁদুরে কেটে টুকরা টুকরা করেছে। তেলাপোকায়ও কাপড় কেটে ফুটো করেছে। সেগুলো আর বিক্রি করা যাবে না।

এদিকে, বুধবার প্রথমদিন মার্কেটে অনেক দোকান বন্ধ দেখা গেছে। এসব দোকানের মালিকরা এখনো দোকান খোলেননি। যাদের একাধিক মার্কেটে দোকান আছে, তারা একটি অথবা দুটি দোকান খুলেছেন। বেচাকেনা বাড়লে দোকান খোলা হবে।

market-4.jpg

সিরাজ হোসেনের মৌচাক, আনারকলি ও ফরচুন শপিংমলে তিনটি দোকান। তিনি বলেন, ‘বিক্রি কম বলে ফরচুনের দোকান খুলছি না। এখন সিজন নয়, দেখি কিছুদিন।’

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চলতি বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে পহেলা বৈশাখের ব্যবসায় ধস নামে। শেষ পর্যন্ত পবিত্র ঈদুল ফিতরে ভালো ব্যবসা হয়।

যদিও রোজার প্রথম ১১ দিন কঠোর বিধিনিষেধের কারণে দোকানপাট ও বিপণি-বিতান বন্ধ ছিল। কোরবানির ঈদের আগে শেষ সময়ে কয়েকদিন দোকান খুললেও ব্যবসা হয়নি। তারা প্রচুর লোকসানে রয়েছেন।

বেইলি রোডে অভিজাত এক জুয়েলারি দোকানের ম্যানেজার বুধবার দুপুরের দিকে জানান, আজ তিনি দোকান খুলেছেন। কিন্তু এখনো এক টাকাও বিক্রি করতে পারেননি।

market-4.jpg

আরেক বিক্রেতা ফরিদ বলেন, ‘দোকান খুললাম, তারপর থেকেই বৃষ্টি। আবহাওয়া খারাপ। কেউ বের হচ্ছে না। সন্ধ্যার পরে কিছুটা বিক্রি বাড়তে পারে।’

কেউ কেউ আশা করছেন, আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বিক্রি বাড়বে। ১৫ আগস্ট পর্যন্ত অফিস ছুটির সময় মার্কেট জমতে পারে।

এদিকে, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করতে হবে— এমন শর্তে সব ধরনের দোকানপাট ও বিপণি-বিতান খুলেছে সরকার। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত দোকানপাট ও বিপণি-বিতান সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১০ ঘণ্টা খোলা থাকবে।

market-4.jpg

করোনার সংক্রমণরোধে গত ২৮ জুন থেকে সীমিত আকারে বিধিনিষেধ শুরু হয়। সেদিন থেকেই সারাদেশের দোকানপাট ও বিপণি-বিতান বন্ধ। পরে ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে আটদিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। তাতে ঈদের আগে ছয়দিন বেচা-বিক্রির সুযোগ পান ব্যবসায়ীরা।

এদিকে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট ও বিপণি-বিতান চালু থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।’

এনএইচ/এএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।