পুরোনো রূপে ফিরেছে রাতের ঢাকা
রাজধানীর মিরপুর রোডের সায়েন্স ল্যাবরেটরির মোড়ে দাঁড়িয়ে গরমে দর দর করে ঘামছিলেন কর্তব্যরত কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য। নীলক্ষেত, এলিফ্যান্ট রোড ও ধানমন্ডি থেকে আসা শত শত যানবাহন সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তারা।
এ সময় রাস্তায় শত শত বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, কাভার্ড ভ্যান, মাইক্রোবাস, জিপগাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, মোটরসাইকেল এবং রিকশা দেখা যায়। ধানমন্ডি, নীলক্ষেত ও এলিফ্যান্ট রোড থেকে এসে যানবাহন সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে যানজটে আটকা পড়তে দেখা যায়।
বেশ কয়েক মিনিট যানজটে আটকে থাকার পর ট্রাফিক পুলিশ সিগন্যাল দিতেই বাসের হেলপারদের শেষ মুহূর্তে উচ্চশব্দে যাত্রী ডাকা, দ্রুতগতিতে ছুটে চলা যানবাহনের ঘন ঘন হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো এবং রিকশার টুং টাং শব্দে বুধবার (১১ আগস্ট) রাত সাড়ে ৭টায় পুরোনো রূপে ফিরেছে ঢাকা।
করোনার সংক্রমণরোধে সরকারের নির্দেশে গত ১ জুলাই থেকে গণপরিবহন বন্ধ ছিল। মাঝে ঈদুল আজহা উপলক্ষে কিছুদিন বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। পরে ২৩ জুলাই থেকে আবারও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার।
কঠোর বিধিনিষেধের এ সময়ে রাস্তায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। সন্ধ্যার পর থেকে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন ছোট-বড় সড়কে সুনসান নীরবতা নেমে আসত।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বিধিনিষেধ শেষে আজ ভোর থেকে গণপরিবহন চলাচল শুরু করে। ফলে সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহন ও মানুষের যাতায়াত বাড়ে। তবে কয়েক দফা বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়ার কারণে দিনের বেলায় তুলনামূলক যানবাহন ও মানুষের সংখ্যা কম ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ে।
সব যানবাহনে যাত্রী খুব বেশি দেখা যায়নি। সন্ধ্যার পর বিভিন্ন শপিংমল ও মার্কেটে মানুষের ঢল নামে। অনেকেই বিধিনিষেধ শেষে প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে মার্কেটে ছুটে আসেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, করোনার সংক্রমণরোধে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিলেও অনেকেই সঠিকভাবে তা মানছেন না। মার্কেটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক থাকলেও তা সঠিকভাবে পরছেন না। কেউ কানের পাশে, কেউ থুতনি কিংবা নাকের নিচে নামিয়ে রাখছেন।
এদিকে, টানা বিধিনিষেধ চলাকালে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রিকশাই প্রধান বাহন ছিল। আজ থেকে গণপরিবহন চালু হওয়ায় রিকশা ভাড়া কমেছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
এমইউ/এএএইচ/এএসএম