মাদারীপুরে সরিষার মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা

জমির এক পাশে সরিষাক্ষেত আরেক পাশে বসানো হয়েছে মৌ-বাক্স। চাষ করা মৌমাছি দিয়ে সরিষা ফুল থেকে চলছে মধু সংগ্রহ। মধু আর মৌমাছি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌ চাষিরা।
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় বিস্তীর্ণ রমজানপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রমজানপুর গ্রামে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
ক্ষেতের পাশে ২০০টি মৌ-বাক্স বসিয়েছেন বরিশালের মুলাদী এলাকার মো. আজহার উদ্দিন। মাত্র ১০ দিনে ৭ মণ মধু সংগ্রহ করেছেন তিনি। আগামী সাতদিনে আরও ১০ মণের মতো মধু সংগ্রহ করতে পারবেন।
আজহার বলেন, এরই মধ্যে অর্ধেকের বেশি মধু বিক্রি হয়ে গেছে। অল্প খরচে লাভ বেশি এ ব্যবসায়। একবার বাক্স তৈরি করলে তা অনেক বছর ব্যবহার করা যায়।
তিনি আরও বলেন, এরপর আমরা শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় যাবো। সেখানে কালোজিরা চাষ হয়েছে। সেই কালোজিরা থেকে মধু সংগ্রহ করবো। কালোজিরার মধু আরও বেশি স্বাদ হয়।
আজহারের সহযোগী মো. হযরত আলী বলেন, মধু চাষে তেমন কষ্ট হয় না। সরিষা ক্ষেতের পাশে একবার মৌ-বক্স বসালেই মৌমাছি সরিষার মধ্যে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে। অল্প দিনেই অনেক মধু পাওয়া যায়।
স্থানীয় বসিন্দা জিয়া, আ. রহমান, হিরা, জিহাদ, মো. লিটন ব্যাপারী জানান, গত বছরও এ গ্রামে সরিষা ক্ষেতের পাশে মধু চাষ হয়েছে। এবারও হচ্ছে। অনেকেই এখান থেকে মধু কিনে নিচ্ছেন।
কালকিনির রমজানপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তানভীর হাসান জাগো নিউজকে বলেন, সরিষা ক্ষেতের পাশেই বাক্স বসিয়ে অল্প খরচে মধু চাষ করা যায়।
এদিকে উত্তর রমজানপুরে শাহজাহান নামের আরেকজন ২০০টি মৌচাক বসিয়ে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করছেন।
কালকিনির রমজানপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির চাষ করলে সরিষার ফলনও ভালো হয়। কিন্তু অনেক কৃষক ভাবেন মৌমাছির ঘোরাঘুরির ফলে তাদের ফলন ভালো হবে না। কিন্তু তাদের এ ধারণা ঠিক না। মৌমাছির ফলে সরিষা ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। এতে সরিষার উৎপাদন বাড়ছে। তাই আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বুঝিয়ে এই মধু চাষের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আশা করছি আগামী বছর আরও বেশি করে মধুচাষ হবে।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসজে/এমএস