বিমানের ই-মেইল সার্ভার হ্যাকে তেমন ক্ষতি হয়নি: প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৭ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২৩

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ই-মেইল সার্ভার হ্যাক করা চক্র মুক্তিপণ চায়নি দাবি করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেছেন, বিমানের ই-মেইল সার্ভার হ্যাক হলেও তাতে তেমন ক্ষতি হয়নি।

রোববার (২৬ মার্চ) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় মাহবুব আলীর পাশে থাকা বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউল আজিম দাবি করেন, হ্যাকারদের মুক্তিপণ দাবি করা সংক্রান্ত কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।

গত ১৭ মার্চ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ই-মেইল সার্ভার হ্যাক হয়। সেদিন বেলা সোয়া ২টার দিকে সার্ভার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে হ্যাকাররা বিমানকে প্রথম নিজেদের দাবির কথা জানায়।

আরও পড়ুন: ই-সার্ভার হ্যাক নিয়ে যা জানালো বিমান

বিমান বাংলাদেশ সূত্র জানিয়েছে, গত ২১ মার্চ হ্যাকাররা জানায়, তাদের কাছে বিমানের ১০০ গিগাবাইটের বেশি ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য রয়েছে। এছাড়া বিমানের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক থেকে অনেক ডাটাবেজ তারা ডাউনলোড করে রেখেছে। বিমান যদি তাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে তারা নিজেদের ব্লগে এগুলো প্রকাশ করে দেবে। এরপর ২২ মার্চ বিকেলে হ্যাকাররা বিমানকে আরও একটি বার্তা পাঠায়। ওই বার্তায় বলা হয়, ‘গণমাধ্যমে আপনারা বলছেন, কোনো তথ্য ফাঁস হয়নি। কিন্তু আপনারা ভুল।’

ফ্লাইট সংক্রান্ত তথ্য, বিমানের যাত্রী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাসপোর্টের তথ্যসহ আর বেশ কিছু তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে বার্তায় উল্লেখ করে হ্যাকাররা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে হ্যাকাররা বিমানের কাছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি করেছেন। অন্যথায় সব তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনার ছয় দিন পর গত ২৩ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান তাদের ই-মেইলে সার্ভার র্যানসমওয়্যার আক্রান্ত হয়েছে বলে জানায়।

আরও পড়ুন: বিমানের ই-মেইল সার্ভার হ্যাক, তদন্তে কমিটি গঠন 

হ্যাকাররা বিমানের কাছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, হ্যাকাররা টাকা দাবি করেছে বলে যে কথাটা উঠেছে সেটি সঠিক নয়। এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। এ বিষয়ে বিমান আনুষ্ঠানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। টাকা দাবি করার ঘটনা ভিত্তিহীন। এ ধরনের কোনো প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।

হ্যাকাররা বেশি ক্ষতি করতে পারেনি জানিয়ে মাহবুব আলী সাংবাদিকদের আরও বলেন, হ্যাকাররা ফায়ারওয়ালের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। এ কারণে তারা ক্ষতিও বেশি করতে পারেনি। তারা তেমন কোনো তথ্য নিতে পারেনি। সাইবার অ্যাটাক হলে যা কিছু করতে হয়, তা বিমানের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। জিডি করা হয়েছে, সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কেন ৯ দিনেও বিমানের ই-মেইল সার্ভার হ্যাকারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা যায়নি, এমন প্রশ্নে বিমানের এমডি শফিউল আজিম বলেন, বিমান পরিচালনায় বা অপারেশনাল কোনো কাজে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি, যথারীতি কাজ করছে। কোনো বিষয়ে অসুবিধা হয়নি। আজকেও কাজ চলছে। আমরা আশা করি, আগামীকাল সোমবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে এ ঘটনার একটি পরিপূর্ণ চিত্র দিতে পারবো।

বিমান সাইবার হামলার শিকার হতে পারে- এমন আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল কি না, জানতে চাইলে শফিউল আজিম বলেন, এ ধরনের কোনো সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি। যৌথভাবে বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। এই দলের কাজ শেষ হলে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে বিমানের বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।

এমএমএ/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।