এমএসএফের প্রতিবেদন

সেপ্টেম্বরে অজ্ঞাতপরিচয় ৪১ মরদেহ উদ্ধার, গণপিটুনিতে নিহত ৭

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫৩ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চলতি সেপ্টেম্বর মাসে কারা হেফাজতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এ মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৪১ অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব মরদেহের বেশির ভাগই ডোবা খাল, নদীতে ভাসমান, বস্তাবন্দি, মহাসড়কের পাশে, ব্রিজ ও রেললাইন ইত্যাদি স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) চলতি মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে প্রকাশ করে সংগঠনটি। দেশের ১২টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

সংগঠনটি বলছে, প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই স্থানীয় হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের মাধ্যমে তা যাচাই করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, রাজনৈতিক সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। ঘটেছে গণপিটুনির ঘটনাও।

সাইবার নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার
সাইবার নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার প্রবলভাবে সমালোচিত। এ আইনে মামলার নামে হয়রানি কমেনি। ধারাবাহিকভাবে এর অপব্যবহার বেড়েই চলেছে। সেপ্টেম্বর মাসে সাইবার নিরাপত্তা আইনে দু’টি মামলা হয়েছে। আলোচ্য সময়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ১৫ জন সাংবাদিক নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

এমএসএফ মনে করে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি ছিল পুরোপুরি নিবর্তনমূলক আইন। সরকারের পক্ষ থেকে ডিজিটাল মাধ্যমে অপরাধ দমনের কথা বলা হলেও বাস্তবে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই এটি বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। সরকার সব পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা ও দাবি উপেক্ষা করে নিজেদের মতো করে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম পরিবর্তন ও কিছু ধারার সংশোধনী এনে জামিনযোগ্য ও কিছু সাজার মেয়াদ কমিয়ে সেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেরই আদলে সংসদে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ পাস করেছে। অনেক ধারায় শাস্তির মেয়াদ ও মাত্রা কমানো হলেও বিনা পরোয়ানায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার, তার বাড়ি বা স্থাপনায় তল্লাশি চালানো— সেগুলো অবিকল একই রকম রেখে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার একটি ঘটনা ঘটেছে। কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ দু’টি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে একজন মারা গেছেন। এ মাসে কারা হেফাজতে দশজনের মৃত্যু হয়েছে।

হয়রানিমূলক রাজনৈতিক ২১টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ১৮টি, ক্ষমতাশীন দলের নেতাকর্মীরা তিনটি মামলা করেছে। এসব মামলায় ৬৯৭১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ মাসে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে চারজন, ভারতীয় নাগরিকদের গণপিটুনিতে একজনসহ পাঁচজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আটটি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

এ মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৪১ অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব মরদেহের বেশির ভাগই ডোবা খাল, নদীতে ভাসমান, বস্তাবন্দি, মহাসড়কের পাশে, ব্রিজ ও রেললাইন ইত্যাদি স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আগস্টে অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ উদ্ধারের সংখ্যা ছিল ২৪টি।

এছাড়া সেপ্টেম্বরে ৩৩৯ টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ৪৯টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ২৬টি, ধর্ষণের পরে হত্যার তিনটি ঘটনা ঘটেছে। দুইজন নারী এসিড নিক্ষেপের শিকার ও দশজন অপহরণের শিকার হয়েছেন। সেপ্টেম্বরে ১১টি গণপিটুনির ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছেন।

এসএম/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।