ইসির কেউ নন, ডিসিরাই হচ্ছেন জাতীয় নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২২ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিজস্ব কর্মকর্তারাও রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে কমিশন থেকে কর্মকর্তা বাছাই করে এ দায়িত্ব দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দাবিটি টিকলো না। ফলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ডিসিরাই রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) ইসির একাধিক সূত্র জাগো নিউজকে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও জাতীয় সংসদের উপনির্বাচন নিজস্ব কর্মকর্তা দিয়ে আয়োজন করে আসছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে ইসি এখনো প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ওপরই নির্ভরশীল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে ডিসিদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

যদিও ইসির ডাকা সংলাপে অংশগ্রহণ করা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্টজনেরা জাতীয় নির্বাচনে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে সেই প্রস্তাব টিকলো না। এর ফলে ডিসিরাই আগামী জাতীয় নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পাবেন।

ইসির নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জাতীয় নির্বাচন বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রশাসনের কর্মকর্তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্যদের সঙ্গে যেভাবে যোগাযোগ রেখে নির্বাচন সম্পন্ন করেন, সেই দক্ষতা ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের নেই। এজন্য এবারো রিটার্নিং কর্মকর্তা করার ক্ষেত্রে ডিসিদেরই প্রাধান্য দিয়েছে কমিশন।

গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, ইসি ৩০০ আসনের জন্য ৩০০ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা যেমন নিয়োগ দিতে পারে, তেমনই একজনকে দুই বা ততোধিক আসনের জন্যও নিয়োগ দিতে পারে। তবে ৩০০ আসনের জন্য ৩০০ রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের কোনো পরিকল্পনা ইসির নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, সরকারের উপসচিব পদমর্যাদার কোনো কর্মকর্তাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান রয়েছে। তবে প্রশাসনিক কর্তৃত্ব বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন প্রশাসন ক্যাডার থেকে প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ডিসিরা এ দায়িত্ব পেয়ে থাকেন। অন্য ক্যাডার থেকে কখনো এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয় না।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনে জেলাভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। আর ডিসি জেলার প্রধান হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তার অধিক কর্তৃত্ব রয়েছে বলে মনে করে কমিশন। যে কারণে প্রতিটি সংসদের সাধারণ নির্বাচনে ডিসিরাই গুরুত্ব পান।

ডিসিদের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি ইসির ডাকা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে সংলাপে উঠে আসে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা জানিয়েছিলেন, ইসির মাঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে হয়েছে। ‘মিক্সড (ডিসিদের সঙ্গে তারাও) করে রিটার্নিং কর্মকর্তা হতে চান তারা। এটা সত্যি যে, রিটার্নিং কর্মকর্তা অ্যাডমিন (প্রশাসন) ক্যাডার থেকে দেওয়া হয়। সব আসনে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ার অ্যাবিলিটি ইসির নেই। তবে বাছাই করে কিছু কর্মকর্তাকে সেখানে দেওয়া যায় কি না, সেরকমই কিছু চাওয়া হচ্ছিল। তারা মনে করে, তাদের কিছু দিলে তারা সম্মানিত বোধ করে। আমরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বসবো।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন আয়োজিত সংলাপেও বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়ার সুপারিশ আসে। এমনকি সাবেক নির্বাচন কমিশনারও এ পরামর্শ দিয়েছিলেন।

এমওএস/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।