প্রধান উপদেষ্টা

গণঅভ্যুত্থান এবারের বইমেলায় নতুন তাৎপর্য নিয়ে এসেছে

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:২৮ পিএম, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মহান আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত অভ্যুত্থান এবারের বইমেলায় আমাদের সামনে নতুন তাৎপর্য নিয়ে এসেছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমিতে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। এ বছর বইমেলার প্রতিপাদ্য জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান এবং তার মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ।

ড. ইউনূস বলেন, একুশ মানে আত্মপরিচয়ের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া। একুশে মানে অবিরাম সংগ্রাম। নিজের পরিধি আরও বাড়িয়ে নেওয়া। এবারের একুশের প্রেক্ষিত আমাদের নতুন দিগন্তে প্রতিস্থাপন করেছে।

বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারের বুকের রক্তে যে অঙ্গীকার মাখা ছিল তাতে ছিল জুলাই অভ্যুত্থান নিশ্চিত করার মহাবিস্ফোরক শক্তি।

jagonews24

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এই মহাবিস্ফোরণ গণঅভ্যুত্থানে দেশ পাল্টে গেলো। এ বিস্ফোরণ আমাদের মধ্যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় গ্রথিত করলো। ১৭ কোটি মানুষের প্রতি জনের সত্তায় এ প্রত্যয় গভীরভাবে গ্রথিত হলো। অমর একুশের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ প্রত্যয় শপথ নিতে এসেছি।

তিনি বলেন, একুশ আমাদের মূল সত্তার পরিচয়। একুশ আমাদের ঐক্যের দৃঢ় বন্ধন। এ বন্ধন ছোট-বড়, যৌক্তিক-অযৌক্তিক, দীর্ঘস্থায়ী-ক্ষণস্থায়ী সব দূরত্বের ঊর্ধ্বে। এজন্য সব জাতীয় উৎসব, সংকটেও দুর্যোগে আমরা শহীদ মিনারে ছুটে যাই। যেখানে আমরা স্বস্তি পাই। আমরা শান্তি চাই। আমরা সমাধান পাই। সাময়িকভাবে উদ্দেশ্য ও ঐক্য খুঁজে পাই। একুশ আমাদের মানুষকে এভাবে তৈরি করে দিয়েছে। একুশ আমাদের পথ দেখায়।

jagonews24

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, মাত্র ছয় মাস আগে জুলাই অভ্যুত্থান জাতিকে ঐতিহাসিক গভীরতায় ঐক্যবদ্ধ করে দিয়েছে। যার কারণে আমরা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও মানবিকভাবে বিধ্বস্ত একটি দেশকে দ্রুততম গতিতে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাবার লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিতে সাহস যুগিয়েছে।

jagonews24

তিনি বলেন, একুশের টান বয়সের ঊর্ধ্বে, প্রজন্মের ঊর্ধ্বে। একুশের টান প্রজন্মে-প্রজন্মে বিস্তৃত হয়েছে। শুধু তাই নয় এ টান গভীরতর হয়েছে। আমাদের দুঃসাহসী করেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান তারই জ্বলন্ত প্রমাণ। দুঃস্বপ্নের বাংলাদেশকে ছাত্র-জনতা নতুন বাংলাদেশের রূপান্তরিত করায় ঝাপিয়ে পড়েছে। তারা অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছে। আমাদের তরুণ-তরুণী কিশোর-কিশোরী রাস্তার দেয়ালে তাদের স্বপ্নগুলো, তাদের আকাঙ্ক্ষা ও দাবিগুলো অবিশ্বাস্য দ্ঢ়তায় এগিয়ে নিয়েছে। আমাদের রাস্তার দেয়াল এখন ঐতিহাসিক দলিলে রূপান্তর হয়ে গেছে। এগুলো স্থান এখন আমাদের বুকের মধ্যে এবং জাদুঘরে হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

বইমেলার উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, তারা এ দেয়াল চিত্রগুলো মেলায় আসা এবং যাওয়ার পথে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছে।

এমইউ/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।