ক্রেতাবিক্রেতার পদচারণায় মুখরিত হোক বাণিজ্য মেলা

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৪:০৮ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৮

খ্রিস্টীয় নববর্ষের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হল ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। বিনোদন বঞ্চিত নগরবাসীতো বটেই দেশের বাইরে থেকেও ক্রেতারা সমবেত হন মাসব্যাপী এই পণ্যের মেলায়। মূলত ব্যবসা-বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে এই মেলার আয়োজন করা হলেও সকল শ্রেণির মানুষের সমাগমে মেলা প্রাঙ্গণ পরিণত হয় মিলন মেলায়। এক বছর ধরে মানুষজন অপেক্ষায় থাকেন এই মেলার জন্য। অনেক সময় রাজনৈতিক পরিবেশ ও বৈরি প্রকৃতির কারণে মেলা জমে উঠতে পারে না। এ বছর পরিস্থিতি যথেষ্ট অনুকূলে। তাই আশা করা যাচ্ছে মেলা জমে উঠবে। দেশি বিদেশি ক্রেতা-বিক্রেতাদের উদ্দেশ্যও সফল হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রফতানি পণ্যের মান বাড়াতে এবং নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি করতে ব্যাসায়ীদের প্রতি অাহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার ঢাকা অান্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মেলা ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। ক্রেতাদের চাহিদা মোতারবক বিক্রেতারাও সৃষ্টি করতে পারে নতুন নতুন পণ্য।
তিনি বলেন, অামরা দেশ গড়তে এসেছি। নিজেদের ভাগ্য গড়তে নয়। বিনিয়োগকারীরা যেন সব সুযোগ সুবিধা পায় তার ব্যবস্থা অামরা করে দিয়েছি। শিল্প এবং কৃষি দুটোতেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে অামরা এমনভাবে গড়ে তুলতে চাই যাতে দেশের প্রতিটি নাগরিক গর্বের সঙ্গে চলতে পারে। বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ওষুধ শিল্পকে প্রডাক্ট অব দ্যা ইয়ার ঘোষণা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যে টিকে থাকতে হলে ক্রেতা চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করতে হবে। ঠিক রাখতে হবে মানও। খুঁজতে হবে নতুন বাজার। এছাড়া মেলায় দেশীয় পণ্য বিদেশি ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরার উদ্যোগ নিতে হবে। এর মাধ্যমে রফতানি বাড়াতে হবে। রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে পারলে ২০২১ সালে রপ্তানি আয় ৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশেষ একটি পণ্যের ওপর নির্ভরতার ঝুঁকি রয়েছে। একটি বিশেষ পণ্য সবসময় বাজার ধরে রাখতে পারে না। এক সময় পাট ও মসলিনের উজ্জ্বল অতীত ছিল। কিন্তু সেটি ধরে রাখা যায়নি। এ জন্য পণ্যের বহুমুখী করণের ওপর জোর দিতে হবে।

মাসব্যাপী এই মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেপাল, জাপান ও অারব অামিরাতের ব্যাবসায়ীরা অংশ নিচ্ছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মেলা ব্যবস্থাপনায় যেন রকানো ত্রুটি না থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। মেলা প্রাঙ্গণকে ধুলোমুক্ত রাখতে হবে। নকল, ভেজাল ও নিন্মমানের পণ্য যাতে মেলায় বিক্রি না হতে পারে সে ব্যাপারে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালাতে হবে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকেও এ ব্যাপারে জোর নজরদারি রাখতে হবে। নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। ক্রেতাবিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠুক এবারের বাণিজ্য মেলা-এই প্রত্যাশাও থাকলো।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।