গণপরিবহন শ্রমিকের পাশে দাঁড়ান
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। এতে নিদারুণ দুর্ভোগে রয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে পরিবহন শ্রমিকদের কষ্টের কোনো সীমাপরিসীমা নেই। তাদের আয়-রোজগার বন্ধ। এ অবস্থায় তারা যেন কোনো ধরনের দুর্ভোগে না থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১৫ রোজার মধ্যেই পরিবহন শ্রমিকদের ঈদ বোনাসসহ বেতন-ভাতা পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে মহান মে দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে যাত্রীকল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, করোনা মহামারিতে কর্মহীন পরিবহন শ্রমিকদের এই মুহূর্তে নিয়োগ ও কর্মঘণ্টার চেয়েও ন্যূনতম খেয়েপরে বেঁচে থাকার অধিকার দিতে পরিবহন মালিক ও সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই।
তিনি বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকদের কাঠামোগত মজুরির পরিবর্তে গণপরিবহন মালিকরা দৈনিক ইজারার ভিত্তিতে বাস, হিউম্যান হলার, টেম্পু, অটোরিকশা প্রভৃতি যানবাহন চালকদের হাতে তুলে দেন। আমাদের দেশে একজন চালক রাস্তায় শত প্রতিকূলতার মধ্যে গণপরিবহনটি পরিচালনার পাশাপাশি দিনভিত্তিক মালিকের ইজারা, দৈনন্দিন জ্বালানি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ, চালক নিজের ও হেলপারের বেতন উঠাতে গিয়ে অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। এতেই পরিবহনে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।’
‘এবারের মে দিবসে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকারের পরিবর্তে বেঁচে থাকার জন্য রাস্তায় রাস্তায় ত্রাণের দাবিতে সড়ক অবরোধ করছে। লকডাউনে রোজগার হারা শ্রমিকটি ভবিষ্যতের আশায় খেয়ে না খেয়ে মালিকের গাড়ি পাহারা দিচ্ছে। অপরদিকে বাজার হারানোর শঙ্কায় পোশাক খাতের শ্রমিকদের ঝুঁকিতে ঠেলে দিয়ে মে দিবস পালন করা অনেকটা তামাশার শামিল।’
এহেন ন্যক্কারজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে মহান মে দিবসের শিক্ষা নিয়ে প্রতিটি গণপরিবহন চালক-হেলপারকে স্থায়ী বেতন-কাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সংবলিত নিয়োগপত্র প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান তিনি। একই সাথে সড়ক ও নৌ খাতের সব শ্রমিককে পূণাঙ্গ ঈদ বোনাসসহ একমাসের বেতন ১৫ রমজানের মধ্যে পরিশোধের জোর দাবি জানান তিনি।
চলছে পবিত্র মাহে রমজান। সামনে ঈদ। এ অবস্থায় পরিবহন শ্রমিকরা পড়েছে চরম বিপাকে। আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। পরিবহন মালিকদের তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। শ্রমিক সংগঠনগুলোরও এ ব্যাপারে দায়িত্ব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি।
এইচআর/বিএ/এমএস