অভিনয়-গান আর স্টাইলের নিখুঁত সমন্বয় আয়ুষ্মান
বলিউডের অঙ্গনে এমন অভিনেতা খুব কমই আছেন, যিনি একাধারে অভিনয়শিল্পী, গায়ক, উপস্থাপক ও মিউজিশিয়ান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আয়ুষ্মান খুরানা তাদেরই একজন। আজ তার জন্মদিন। এই দিনটি কেবল একজন তারকার ব্যক্তিগত আনন্দের দিন নয়, বরং বলিউডপ্রেমীদের জন্যও উদযাপনের উপলক্ষ। কারণ তিনি এক দশকে প্রমাণ করেছেন, ভিন্নধর্মী গল্প আর চরিত্রের মধ্য দিয়েই বড় হওয়া যায়। ছবি: আয়ুষ্মানের ইনস্টাগ্রাম থেকে
-
পাঞ্জাবের চণ্ডীগড়ে জন্ম নেওয়া আয়ুষ্মান প্রথম আলোচনায় আসেন রিয়েলিটি শো ‘এমটিভি রোডাইস’ এর বিজয়ী হয়ে। তবে তিনি সেখানেই থেমে থাকেননি। টেলিভিশনের পর্দা থেকে সিনেমার বড় পর্দায় উঠে আসেন তিনি নিজের প্রতিভার জোরে।
-
তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘ভিকি ডোনার’ (২০১২) বলিউডে নতুন ধারা তৈরি করে। স্পার্ম ডোনেশন নিয়ে নির্মিত এই ছবিটি সামাজিকভাবে সংবেদনশীল হলেও আয়ুষ্মান সেটিকে সহজ-সরল হাস্যরসে উপস্থাপন করেন। প্রথম ছবিতেই জাতীয় পুরস্কার, এটাই তার সম্ভাবনার সেরা প্রমাণ।
-
আয়ুষ্মানকে আলাদা করেছে তার চরিত্র বাছাই করার ধরন। প্রচলিত নায়কোচিত ধারা ভেঙে তিনি এমন সব চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যা আগে মূলধারার তারকারা এড়িয়ে যেতেন।
-
‘শুভ মঙ্গল সাবধান’-এ যৌনজীবন নিয়ে সামাজিক সংকোচ ভাঙা।
-
‘আন্ধাধুন’-এ অন্ধ পিয়ানোবাদকের ভূমিকায় থ্রিলার জগতে অনন্য উপস্থিতি।
-
‘আর্টিকেল ১৫’-এ বর্ণবৈষম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচারের বার্তা।
-
‘বালা’-তে টাক সমস্যায় ভোগা এক সাধারণ যুবকের গল্প।
-
প্রতিটি সিনেমাতেই তিনি প্রমাণ করেছেন, নায়ক মানে শুধু প্রেম-অ্যাকশন নয়, বরং বাস্তব জীবনের জটিলতা ও সমস্যাগুলোকেও বড় পর্দায় উপস্থাপন করা যায়।
-
অভিনয়ের পাশাপাশি আয়ুষ্মান একজন দক্ষ গায়কও। ‘পানি দা রং’ গান দিয়ে যাত্রা শুরু করে তার কণ্ঠ বলিউডপ্রেমীদের হৃদয়ে দাগ কাটে। পরবর্তীতে ‘নাজম নাজম’, ‘সাদি গলি’ কিংবা ‘মিত্তি দি খুশবু’-প্রতিটি গানই তাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে এক অনন্য গায়ক হিসেবে। তার কণ্ঠে মাটির ঘ্রাণ আছে, আছে সহজ আবেগের প্রকাশ।
-
আয়ুষ্মান খুরানার স্টাইল বলিউডে আলাদা করে চোখে পড়ে।
-
তিনি ফ্যাশনে এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালোবাসেন। কখনো ঝলমলে জ্যাকেট, কখনো ঢিলেঢালা কুর্তা-পায়জামা, আবার কখনো সম্পূর্ণ ওয়েস্টার্ন স্যুট-সবখানেই তিনি স্বাচ্ছন্দ্য।
-
তার পোশাকে মিশে থাকে আধুনিকতা আর ভারতীয় ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ফ্যাশন ডিজাইনারদের কাছে তিনি এখন এক পরীক্ষিত ক্যানভাস।
-
শুধু বিনোদন নয়, আয়ুষ্মানের কাজের ভেতরে সবসময় একটা সামাজিক বার্তা থাকে। তিনি নিজেই বলেন, ‘সিনেমা শুধু আনন্দ দেওয়ার জন্য নয়, সচেতনতা তৈরির জন্যও।’ তাই তার চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে কখনো আমরা সামাজিক ট্যাবু ভাঙতে দেখি, কখনো দেখি পরিবর্তনের আবেদন।