পপ মহারাজার জন্মদিন
বিশ্বসঙ্গীতের ইতিহাসে এমন একজন শিল্পীর নাম খুঁজে পাওয়া কঠিন, যার অবদান এত গভীর ও বিস্তৃত হয়। মাইকেল জ্যাকসন, যাকে সর্বত্র ‘পপের রাজা’ হিসেবে সম্বোধন করা হয়, তার গান ও নৃত্য কেবল একটি সময়ের নয়, বরং শতাব্দীর সাংস্কৃতিক মাপকাঠিতে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রতি বছর ২৯ আগস্ট, বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ তার জন্মদিন উদযাপন করেন, স্মরণ করেন তার তার গান ও অনবদ্য পরিবেশনার স্মৃতি। ছবি: শিল্পীর নামে চালানো ভ্যারিফাইড ইনস্টাগ্রাম পেজ ও এএফপি
-
১৯৫৮ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানাপলিস শহরে তার জন্ম। তার পুরো নাম ছিল মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন। জ্যাকসন পরিবার ছিলেন মিউজিশিয়ানদের পরিবার, যেখানে বাবার নেতৃত্বে সাত ভাইবোন গড়ে তোলেন ‘জ্যাকসন ফাইভ’ নামক একটি গ্রুপ। ছোটবেলা থেকেই মাইকেল তার অসাধারণ গান এবং নৃত্যের মাধ্যমে সবার মন জয় করতে শুরু করেন।
-
জ্যাকসন ফাইভ গ্রুপের সঙ্গে মাইকেল জ্যাকসনের প্রথম সাফল্য লাভ হয়, কিন্তু পরবর্তীতে একক শিল্পী হিসেবে তিনি বিশ্ব সঙ্গীত জগতে এক নতুন দিগন্ত খুলে দেন। ১৯৮২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘থ্রিলার’ অ্যালবামটি তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় মাইলফলক। এই অ্যালবামটি বিশ্বব্যাপী বিক্রি হয় কোটি কোটি কপি এবং এটি আজও ইতিহাসের সেরা বিক্রিত অ্যালবামগুলোর মধ্যে একটি।
-
মাইকেল জ্যাকসনের নাচ ছিল এক অনন্য সৃষ্টি, বিশেষ করে তার ‘মুন ওয়াক’ পা চালানোর অভিনব কৌশল যাকে আজও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনুকরণ করা হয়। তার গানের কথা ও সুর ছিল গভীর অর্থবহ, সামাজিক বার্তা দিয়ে ভরপুর। ‘বিলি’, ‘ব্ল্যাক অর হোয়াইট’, ‘বাধ’ এসব গানের মাধ্যমে তিনি বর্ণবাদ, মানবাধিকার, ও সমাজের নানা সংকটকে তুলে ধরেছেন।
-
মাইকেল জ্যাকসনের ব্যক্তিগত জীবন ছিল নানা চ্যালেঞ্জে পরিপূর্ণ। একদিকে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মানবতাবাদী এবং নানা সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘হেল্পিং হ্যান্ডস’ ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন দাতব্য কাজের মাধ্যমে তিনি বিশ্বজুড়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন।
-
২০০৯ সালের ২৫ জুন হঠাৎ করেই মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যু সারা বিশ্বে শোকের ছায়া ফেলেছিল। যদিও তিনি চলে গেছেন, তার সুর আর নাচ আজও কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছে। তিনি শুধুমাত্র একজন গায়ক বা নৃত্যশিল্পী নন, বরং বিশ্বসংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে রয়েছেন।