গ্রীষ্মের রসালো জাম শুধু স্বাদেই নয়, উপকারেও অনন্য
গরমকাল মানেই আম-কাঁঠালের মৌসুম, আর এই মৌসুমের আরেকটি অবহেলিত কিন্তু ভীষণ উপকারী ফল হলো জাম। ছোটখাটো চেহারার এই টক-মিষ্টি ফলটি শুধু যে জিভে জল আনে, তা নয় এর ভেতরে লুকিয়ে আছে অসংখ্য স্বাস্থ্যগুণ। হজমশক্তি বাড়ানো থেকে শুরু করে ত্বকের উজ্জ্বলতা, এমনকি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও রয়েছে এর প্রাকৃতিক ভূমিকা। অনেকেই হয়তো জামকে শুধু পথেঘাটের ফল বলেই জানেন, অথচ এই রসালো ফল হতে পারে আপনার সুস্থতার এক নির্ভরযোগ্য সঙ্গী। চলুন গ্রীষ্মের এই উপেক্ষিত রত্নটির উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন। ছবি: সংগৃহীত
-
জামে রয়েছে পর্যাপ্ত আঁশ এবং জলীয় উপাদান, যা হজমপ্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে। নিয়মিত জাম খেলে পেটের গ্যাস, ফাঁপা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে স্বস্তি মেলে। এটি অন্ত্রের গতি নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর। তবে অতিরিক্ত খেলে পেটে অম্লতা হতে পারে, তাই পরিমাণমতো খাওয়াই উত্তম।
-
জাম শুধু খাওয়ার জন্যই নয়, এটি মুখের স্বাস্থ্যের জন্যও দারুণ উপকারী। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, ফোলা বা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এই ফল। জামের রস মাউথওয়াশ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। এমনকি জামের পাতাও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে, যা মুখগহ্বরের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক।
-
জামে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা শরীরের প্রতিরোধশক্তিকে বাড়িয়ে তোলে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফল সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং হাঁপানি বা সর্দি-কাশির মতো সমস্যায় উপশম আনতে পারে।
-
আয়রন ও ভিটামিন সি’র চমৎকার উৎস জাম। এটি রক্তকে টক্সিনমুক্ত করতে সাহায্য করে এবং রক্তস্বল্পতা বা হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেইসঙ্গে পটাসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদযন্ত্রকে রাখে সুস্থ।
-
কম ক্যালোরি এবং বেশি ফাইবারের কারণে জাম দ্রুত পেট ভরাতে সাহায্য করে, যা ক্ষুধা কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
-
জাম ত্বকের জন্যও এক আশীর্বাদ। এতে থাকা ভিটামিন এ, বি এবং সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বককে করে প্রাণবন্ত ও মসৃণ। কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বকে তারুণ্যের ছোঁয়া আনে। নিয়মিত জাম খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা দীর্ঘস্থায়ী হয়।
-
জামের গ্লাইসেমিক সূচক অনেক কম, যার ফলে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়তে দেয় না। টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একটি নিরাপদ ও উপকারী ফল। অতিরিক্ত প্রস্রাব বা গলা শুকিয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ কমাতেও জাম কার্যকর ভূমিকা রাখে।