বিশ্বের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া পোপ ফ্রান্সিসের অজানা কিছু তথ্য
একজন ধর্মগুরু হয়েও তিনি হয়ে উঠেছিলেন মানবতার কণ্ঠস্বর। ক্ষমার বার্তা, বিনয়ী জীবনযাপন আর নিঃস্বদের পাশে দাঁড়ানো-এই তিনটি চেতনায় তিনি শুধু খ্রিস্টান ধর্মের নয়, সমগ্র বিশ্বের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন। তিনি পোপ ফ্রান্সিস। ২১ এপ্রিল পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন জনপ্রিয় এই ধর্মগুরু। ছবি: এএফপি
-
পোপ ফ্রান্সিসের জন্মনাম ছিল জর্জ মারিও বেরগোলিও। ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে তার জন্ম।
-
পোপ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর সাধু ফ্রান্সিস অফ আসিসির প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করে ‘ফ্রান্সিস’ রাখেন।
-
বহু শতাব্দীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম পোপ যিনি ইউরোপের বাইরের কেউ। তিনি দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা প্রথম পোপ, যা ভ্যাটিকানের ইতিহাসে একটি নতুন যুগ সূচিত করে।
-
একটি সময় পর্যন্ত তিনি নিজেই তার জন্য রান্না করতেন, বাস করতেন সাধারণ একটি অ্যাপার্টমেন্টে, গাড়ি হিসেবে ব্যবহার করতেন সাধারণ একটি ছোট গাড়ি। তার জীবনযাত্রা ছিল একেবারে সাদাসিধে, যা বিশ্বজুড়ে মানুষের কাছে তাকে অনন্য করে তুলেছিল।
-
পোপ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বিলাসবহুল পোশাক পরার পরিবর্তে তিনি বেছে নেন একটি সাধারণ সাদা পোশাক। পোপের চেয়ারে বসার পরও তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার প্রতি সমান শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শন করে গেছেন।
-
পোপ ফ্রান্সিস বারবার বলেছেন, ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংলাপ, সহানুভূতি ও সহাবস্থানকে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং ভ্যাটিকান-ইসলাম সম্পর্ক আরও মজবুত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
-
যখন কেউ তাকে ‘বিশ্বের পবিত্রতম ব্যক্তি’ হিসেবে অভিহিত করত, তিনি বিনয়ের সঙ্গে বলতেন, ‘আমি একজন সাধারণ পাপী, যাকে ঈশ্বর দায়িত্ব দিয়েছেন।’
-
পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বাস করতেন, পৃথিবী আমাদের ঘর এবং এর যত্ন নেওয়া প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব।
-
তার লেখা এনসাইক্লিক্যাল ‘লাউদাতো সি’-তে পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছিলেন, যা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছিল।
-
পোপ ফ্রান্সিসের জীবন যেন এক মানবতার পাঠশালা। তিনি শিখিয়েছেন বিনয়, সহমর্মিতা আর বিশ্বাস থাকলেই মানুষ ধর্মীয় পরিচয় ছাড়াও একে অন্যের পাশে দাঁড়াতে পারে।
-
তার চলে যাওয়া এক শূন্যতা, কিন্তু রেখে গেছেন ভালোবাসার অমর চিহ্ন।