ডানা মেলেই ছিন্নভিন্ন, আহমেদাবাদে আছড়ে পড়ল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান
ভারতের আহমেদাবাদ থেকে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন নিয়ে ২৩০ জন যাত্রী আর ১২ জন ক্রু উঠেছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমানে। গন্তব্য ছিল লন্ডন, কিন্তু সেই যাত্রা শেষ হলো বিভীষিকায়। উড্ডয়নের মাত্র কয়েক মিনিট পরেই ভয়ংকর যান্ত্রিক ত্রুটি-তারপর ধোঁয়া, আগুন আর মৃত্যু। আকাশের বুকে ডানা মেলতেই ছিন্নভিন্ন হয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ল বিশাল এই যাত্রীবাহী বিমান, মেঘনী নগরের শান্ত দুপুর বদলে গেল আতঙ্ক আর কান্নায়। চারদিকে শুধু ধ্বংসস্তূপ, ছিন্নভিন্ন বস্তু, আর অশ্রুসিক্ত স্বজনদের আহাজারি। ইতিহাসের পাতায় যুক্ত হলো আরেকটি কালো দিন যেখানে মানবিকতা হার মানল প্রযুক্তির ত্রুটির কাছে। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংগৃহীত
-
আগুনে পুড়ে ছারখার হয় চারপাশ, কেঁপে উঠে মেঘনী নগর এলাকা। নিহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন, আহত বহু। এ যেন এক প্রাণান্ত শোকগাথা-যার রেশ দীর্ঘদিন রয়ে যাবে বিমান ইতিহাসে।
-
দুর্ঘটনার কবলে পড়া বিমানটির নাম এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই-১৭১ আর বিমান মডেল বোইং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার।
-
জানা যায়, বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই ককপিট থেকে সংকট সংকেত ‘মে ডে’ পাঠানো হয়। বিমানের উচ্চতা তখন মাত্র ৬২৫ ফুট। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এটি একটি হোস্টেল ও রাস্তার পাশে অবস্থিত ভবনের উপর আছড়ে পড়ে। বিকট বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে চারপাশ। আগুনের লেলিহান শিখা ঢেকে ফেলে আকাশ। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে বিমানের ধ্বংসাবশেষ।
-
বিমান বিধ্বস্তের পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল বিভাগ, সশস্ত্র পুলিশ ও চিকিৎসা দল। আহতদের দ্রুত স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আশপাশের ভবন খালি করে দেয়া হয়। উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে উদ্ধারকারীরাও ঝুঁকির মুখে পড়েন, কারণ বিমানের পেট্রল ট্যাংক বিস্ফোরিত হতে পারে এই ভয় ছিল সবসময়।
-
এরই মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘এই দুর্ঘটনা হৃদয়বিদারক। নিহতদের প্রতি আমার সমবেদনা, আহতদের সুস্থতা কামনা করছি।’
-
দুর্ঘটনায় কবলিত বিমানটির প্রধান পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমীত সাবরওয়াল। প্রায় ৮২০০ ঘণ্টার ফ্লাইট অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। আর সহকারী পাইলট ক্লাইভ কুন্দরের ছিল প্রায় ১১০০ ঘণ্টার অভিজ্ঞতা। দুইজনই বোইং ৭৮৭ উড়ানোর জন্য প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ ছিলেন।
-
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (ডিজিসিএ) এবং বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (এএইআইবি) যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে। বোইং কোম্পানির বিশেষজ্ঞ দলও ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। বিমানের কালো বাক্স উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি বিশ্লেষণ করে বোঝা যাবে, বিমান বিধ্বস্তের ঠিক আগে কী ঘটেছিল।