অ্যামাজন বনের আগুনে সেসব প্রাণী মৃত্যুর মুখে

লাগাতার জ্বলছে ব্রাজিলের আমাজনের রেইন ফরেস্ট বা ‘বৃষ্টি-অরণ্য’। এক সঙ্গে ন’হাজারেরও বেশি দাবানল। পৃথিবীর ফুসফুস বলে মানা হয় যে আমাজন বৃষ্টি-অরণ্যকে, যার দুই-তৃতীয়াংশই ব্রাজিল সীমান্তের মধ্যে। সেই অংশটারই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

অ্যামাজন বৃষ্টি-অরণ্য জীববৈচিত্রে ভরপুর। এই লাগাতার দাবানলে অসংখ্য প্রাণীরও প্রাণহানি ঘটছে।

বিচ্ছু: বিশালাকার এই হলুদ পায়ের বিচ্ছুর দৈর্ঘ্যে এক ফুট। কোনোটা তারও কিছুটা বেশি। এই বিচ্ছুর খাদ্য তালিকায় গিরগিটি, সাপ, ব্যাঙ, ইঁদুর, বাদুর এমনকি পাখিও রয়েছে। শিকার ধরে প্রথমেই তার রক্তে মারাত্মক বিষ ঢুকিয়ে দেয় এরা।

মশা: আমাজনের জঙ্গলে আসা পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে ভয়ের কারণ মশা। পীত জ্বর, ম্যালেরিয়ার মতো প্রাণঘাতী জীবাণু এই মশা মানুষের শরীরে ঢুকিয়ে দেয়। এই মশাও আগুণের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে অ্যামাজন থেকে।

ওয়্যান্ডারিং স্পাইডার: ব্রাজিলিয়ান এই মাকড়শা অ্যারাকনিড শ্রেণির সবচেয়ে বিষধর। এমনকি এই মাকড়সার গ্রিক ভাষায় বিজ্ঞানসম্মত নাম ফোনিউট্রিয়া-র অর্থই খুনি। আকারে ছোট এই মাকড়সাকে ওয়্যান্ডারিং স্পাইডার বলার কারণ গাছে গাছে জাল বোনার বদলে রাতে জঙ্গলের মাটিতে ঘুরে বেড়ায় শিকারের জন্য। ১৯৯৬ সালে এর বিষের অ্যান্টিডোট আবিষ্কার হয়।

ইলেক্ট্রিক ইল: শুধু জঙ্গলের মধ্যেই নয়, অ্যামাজনের নদীও ভয়ঙ্কর সব প্রাণীতে ভর্তি। তাদের অন্যতম এই ইলেক্ট্রিক ইল। এই মাছ বিদ্যুৎ তৈরি করে। তার একটা ঝটকাতেই একজন পূর্ণবয়ষ্ক মানুষের শ্বাসরোধ করে দিতে পারে। ইল মূলত শিকারের কাজেই লাগায় এই দক্ষতা।

বুলেট পিঁপড়ে: অ্যামাজনের জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর সময় যদি আচমকা মনে হয় শরীরে দ্রæত গতির কোনো বুলেট বিঁধেছে, তা হলে নিশ্চিত ধরে নিতে হবে সেটা বুলেট পিঁপড়ে। তার দংশন বুলেট বিঁধে যাওয়ার মতোই। ২৪ ঘণ্টা যন্ত্রণায় ছটফট করতে হবে।

পিরানহা: আমাজন নদীতে প্রচুর সংখ্যক পিরানহা মাছ রয়েছে। নরখাদক বলে পিরানহার বদনাম রয়েছে। এই মাছের দাঁত এত ধারালো এবং চোয়াল এতটাই শক্ত যে মানুষের অঙ্গ অনায়াসে কেটে নিতে সক্ষম এরা। তবে পিরানহা জ্যান্ত মানুষ খেয়েছে এমন কোনো তথ্য এখনো নেই।

বিষাক্ত ডার্ট ফগ: ছোট এবং হলুদ রঙের অত্যন্ত আকর্ষণীর এই ব্যাঙের দেখা অ্যামাজনের জঙ্গলে মিলবে। বিশ্বের বিষাক্ততম প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম বলা চলে একে। বিপদ বুঝলেই এদের হলুদ চামড়া থেকে বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গত হয়। যা খুব কম মাত্রায় রক্তে মিশলে পক্ষাঘাত হতে পারে।

সবুজ অ্যানাকোন্ডা: নির্বীষ এই সাপটিও নরখাদক নামে পরিচিত। কোনো বিষ নেই এদের, তবে একবার শিকারকে ধরলে এর হাত থেকে নিস্তার পাওয়া প্রায় অসম্ভব। শ্বাসরোধ করে শিকারকে মেরে ফেলার পর গিলে নেয় এরা।