যান্ত্রিকতার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে কাঠের নৌকা
গ্রামবাংলার নদীপথে একসময় পালতোলা কাঠের নৌকার সারি চোখ জুড়িয়ে দিত। এখন সে দৃশ্য যেন শুধুই স্মৃতি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে নদীমাতৃক সংস্কৃতির এই অমূল্য ঐতিহ্য। একসময় নদীর বুক চিরে যাত্রা করতেন মানুষ; মাঝি গাইতেন লোকগান, যাত্রীরা মেখে নিতেন নদীর হাওয়া। সেই আবহ, সেই সম্পর্ক এখন বিলীনপ্রায়। ছবি: নাজমুল হুদা
-
নদী ছিল পূর্বাঞ্চলের জীবনরেখা, আর কাঠের নৌকা ছিল সেই পথে চলার একমাত্র বাহন। সেতু-সড়কের আগে মানুষ ভরসা করতো মাঝি-মাল্লা আর ডিঙ্গি নৌকার ওপরেই।
-
শীতলক্ষ্যার জলে ভেসে থাকতো ডিঙ্গি, ময়ূরপঙ্খী, কোষা কিংবা ছৈওয়ালা নৌকা। বাতাসে ওড়া রঙিন পাল, আর ঢেউয়ের গর্জনে তৈরি হতো গ্রামবাংলার সুরেলা দৃশ্য।
-
শীতলক্ষ্যার তীর ঘেঁষা রূপগঞ্জের কিছু ঘাটে আজও দেখা মেলে কাঠের নৌকা। কয়েকজন বয়স্ক মাঝি এখনও দাঁড় হাতে টিকে আছেন। নদীই যেন তাদের জীবনের শেষ ভরসা।
-
এক্সপ্রেসওয়ে, ব্রিজ, ইঞ্জিনচালিত শ্যালো নৌকা-সব মিলিয়ে এখন কাঠের তৈরি ঐতিহ্যবাহী নৌকার জায়গা অনেকটা সংকুচিত। যান্ত্রিকতার বিকাশে হারিয়ে যাচ্ছে আবহমান ঐশ্বর্য। বাঙালির জীবনে নৌকা কেবল যানবাহন নয়, এটি কবিতা, গান, চিত্রকলা আর লোকসংস্কৃতির অংশ। ‘নাও বাইয়া যাও রে মাঝি’ -এই গানের মতোই নৌকাও আজ স্মৃতির প্রতিচ্ছবি।
-
কাঠের তৈরি নৌকাগুলো এখন আর নদীতে মুখ্য ভূমিকা রাখে না। নতুন প্রজন্ম জানেই না এই সরল বাহনের সৌন্দর্য, আত্মিক টান আর সংস্কৃতি কতটা গভীর ছিল।