দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের নিতে হবে: সাকি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৭ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি

দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে রাষ্ট্রের আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ন্যায়সঙ্গত সম্পদ বণ্টন ও উৎপাদনশীল অর্থনীতি গড়ে তুলতে হলে শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি নতুনভাবে সাজাতে হবে। আর তার জন্য রাষ্ট্রকে মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার পূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণসংহতি আন্দোলন–জিএসএস আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে শিক্ষা সংস্কার ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নের অংশ হিসেবে ‘আপনার মতামত, আমাদের ইশতেহার’ উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় এ সভা আয়োজন করা হয়।

আলোচনার শুরুতে দলের শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্যসচিব আতিকুল বারী চৌধুরী।

সভায় জোনায়েদ সাকি বলেন, মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন এবং দক্ষ—উভয় ধরনের জনশক্তি তৈরির চ্যালেঞ্জ এখন সমানভাবে জরুরি। রাষ্ট্র যদি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে নিজের দায়িত্বে নেয়, তাহলে বাজেট বরাদ্দ ও নীতি কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আনতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের জন্য একীভূত ও স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো তৈরি, তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষা অবকাঠামোকে আধুনিক করা ছাড়া এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।

সভায় লেখক ও চিন্তক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, গণশিক্ষা প্রসার ছাড়া উন্নয়ন অসম্ভব। প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি দুর্বল হলে পুরো ব্যবস্থার মান নিচে নেমে আসে।

সার্টিফিকেটকেন্দ্রিক মনোভাবকে তিনি ‘ডিপ্লোমা ডিজিজ’ উল্লেখ করে বলেন, শিখন-অর্জনের চেয়ে সনদ পাওয়াই এখন অনেকের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, শিক্ষা এখন বাণিজ্য ও রাজনীতির প্রভাবের বাইরে নেই। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত সত্য অনুসন্ধান ও সৃজনশীলতা বাড়ানো। উন্নত দেশগুলো যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে এগোচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশকে চিন্তাশীল ও উদ্ভাবনী জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, সবাইকে উচ্চশিক্ষায় ঠেলে দেওয়ার চেয়ে স্কুল ও কলেজ পর্যায় থেকেই শিক্ষার্থীর দক্ষতা অনুযায়ী পথ নির্ধারণ করাই যুক্তিযুক্ত।

সভাপতির বক্তব্যে জিএসএস নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং সাধারণ মানুষের প্রস্তাব মিলিয়েই দল চূড়ান্ত নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- লেখক ও মানবাধিকারকর্মী ইলিরা দেওয়ান, শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক আবুল হাসনাত কবির, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মনযূরুল হক, লেখক ও শিক্ষক সফিক ইসলাম এবং পাঠশালার প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন।

এমডিএএ/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।