জোরজবরদস্তি করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না: আওয়ামী লীগকে নজরুল

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে ঘৃণিত হবেন না। জোরজবরদস্তি করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। একবার ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ২১ বছর ক্ষমতায় আসতে পারেননি। এবার যেই অত্যাচার-নিপীড়ন করছেন, এটা বন্ধ না হলে আর কত ২১ বছর লাগবে সেটা কে জানে।
তিনি বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বলতে চাই সবাইকে নিয়েই আমরা নির্বাচন করতে চাই। জনগণ ঠিক করবে কে ভালো, কে মন্দ, কাকে দায়িত্ব দেওয়া যাবে, কাকে দেওয়া যাবে না। আপনারা এই সুযোগটা গ্রহণ করুন, ভুল করবেন না। তবে সন্দেহ হয়, ভালো কথা শোনার লোক তারা নয়।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মোহাম্মদপুর ৪০ ফুট মেইন রোডে এক সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা উত্তর বিএনপির মোহাম্মদপুর জনের উদ্যোগে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগামী দিনের যে লড়াই, সেই লড়াইয়ে অবশ্যই অবশ্যই আমরা জয়ী হবো। বরাবর গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে জনগণ আমাদের সঙ্গে ছিল এবারও জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কর্মীদের খুন করা হচ্ছে, তাতে কি বিএনপির জনসভায় বা আন্দোলনে জনগণের উপস্থিতি কম রয়েছে? লোক কমছে? কমেনি কখনো, এটাই ইতিহাস।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এ স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, লড়াই তো করতেই হবে আপনাদের, আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে। রাজপথের আন্দোলন সংগ্রাম যেটা বলেছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান। যে ফয়সালা হবে রাজপথে, সেই রাজপথে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা বিনা ভোটে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আছেন। আপনারা চলে যান, পদত্যাগ করুন, এই সংসদ বাতিল করে দেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করুন। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে, তাদের মাধ্যমে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দেবে তারাই সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। তারা হবে জনগণের সরকার।
বিএনপির এ নীতিনির্ধারক বলেন, যে সরকার আজ ক্ষমতায় বসে আছে, তারা বলেছিলেন- ১০টাকা কেজি চাল খাওয়াবে। এখন চালের দাম কমপক্ষে ৫০ টাকা। তারা বলেছিলেন, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে, কিন্তু রেকর্ড কী বলে, এই সরকারের দুঃশাসনের কারণে নতুন করে সরকার সমর্থক কয়েক হাজার কোটিপতি হয়েছেন। কিন্তু প্রায় চার কোটি দেশের মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে আজ যারা ক্ষমতায় তারা গণতন্ত্রকে জবাই করে এক দলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই বাকশালের গোরস্থানের ওপর বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। ১৯৮২ সালে গণতন্ত্রকে হত্যা করে স্বৈরাচারী এরশাদ ক্ষমতা দখল করেছিলেন। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলেন। নয় বছর লড়াই করে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের পুনরায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন।
সমাবেশে বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে অংশ নেন। এ সমাবেশে অনেকেই বাঁশের লাঠি নিয়েও অংশ নিয়েছেন।
বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে সমাবেশে যারা অংশ নিয়েছেন, তারা লাঠিতে বাংলাদেশের পতাকা বেঁধে রেখেছেন। এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা রাজি হননি।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহবায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন, বিএনপি নেতা নাজিমুদ্দিন আলম, তাবিথ আউয়ালসহ উত্তরের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।
কেএইচ/আরএডি/এএসএম