সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা লুটপাটের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত: অলি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২৪ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা গরিবের টাকা লুটপাটের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট অলি আহমদ।

তিনি বলেছেন, সরকার ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বলছে, আইএমএফ থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ঋণ পেয়েছি। এ টাকা শুধু সংস্কার ও প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয় হবে। এ টাকা অন্য খাতে ব্যয় হবে না।
যেমন আমদানি-রপ্তানি ও উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা যাবে না। অন্যদিকে দুর্নীতি ও দুঃশাসন সর্বস্তরে ব্যাপকতা লাভ করেছে। মনে হয় সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা গরিবের টাকা লুট পাটের জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছেন।

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর পূর্বপান্থপথ এফডিসি সংলগ্ন এলডিপির কার্যালয়ের সামনে এলডিপি আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন: পাহারা দিয়েও আন্দোলন ঠেকাতে পারবেন না: ফখরুল

অলি আহমদ বলেন, প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী দেশের উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং করতে দিচ্ছে না। তারা সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করছে। পুলিশ বাহিনী জনগণের পুলিশ হতে পারেনি। দেশে সবার প্রতি সমান আচরণ করা হচ্ছে না। জনগণকে মনের কথা প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ অবস্থায় দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ সরকারের পতনের জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে হবে।

তিনি বলেন, কেউ আমাদের শত্রু না। কারও প্রতি আমাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ নেই। দেশে গণতন্ত্র, শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন দেশপ্রেমিক সরকার।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে এলডিপি প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশের খেলাপি ঋণের শীর্ষে আছে ১০টি ব্যাংক। যার মধ্যে তিনটি ব্যাংকই সরকারি। মুদি ও পান দোকানদারের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ উত্তোলনের প্রমাণ রয়েছে। এগুলোর সঙ্গে সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা জড়িত না থাকলে তা কখনই সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, দেশে আমদানি হ্রাস পেয়েছে। অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। রপ্তানিও কমে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙরের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১১টি জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। কয়েক মাস ধরে তারা জরিমানা দিয়ে আসছে। ডলারের অভাবে মালামাল খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন কমে যাচ্ছে। প্রবাসীরা আগের মতো সরকারকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আগের মতো বৈধপথে টাকা পাঠাচ্ছেন না। কারণ তারা মনে করে আমরা গরিবরা অমানসিক পরিশ্রম করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশে পাঠাই। আর ধনীরা বিলাস বহুল জীবন-যাপনের জন্য তা বিদেশে পাচার করে।

আরও পড়ুন: ইইউ চায় নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দল অংশগ্রহণ করুক: কাদের

অলি বলেন, দিন দিন বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্য বাড়ছে। সর্বোপরি বিদেশি ঋণের কিস্তি ও সুদ নিয়মিত পরিশোধ করা হচ্ছে না। এতে অর্থনীতিতে অব্যাহতভাবে ধস নামছে। বর্তমানে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৭৪০ টাকা।

তিনি আরও বলেন, সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের জন্য বিভিন্নভাবে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ৫০ থেকে শতভাগ বাড়ার কারণে ব্যয়ের পরিমাণও দুই থকে চারগুণ বাড়ছে। এ টাকা তারা মিলে মিশে লোপাট করছে।

এলডিপি মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদের সভাপতিত্বে পদযাত্রা কর্মসূচিতে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম, নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, এস এম মোরশেদ, স্যাকলায়েন, উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমান, মোছা. কারিমা খাতুন, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম মিয়া, আইনবিষয়ক সম্পাদক আবুল হাসেম, প্রচার সম্পাদক নিলু, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক কবির উদ্দিন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সামাদ, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি খোকনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন।

কেএইচ/আরএডি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।