এক যুগ ধরে অপ্রকাশিত তারেক রহমানকে নিয়ে তারিক চয়নের বই

আহমাদুল কবির
আহমাদুল কবির আহমাদুল কবির , মালয়েশিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:৩৮ এএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
তারিক চয়ন/ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে দীর্ঘ ১৭ বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন। তাকে নিয়ে আজ থেকে ১৩ বছর আগে একটি বই সম্পাদনা করেছিলেন কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রেস সচিব তারিক চয়ন। যদিও বইটি অপ্রকাশিতই রয়ে গেছে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সামাজিকযোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানান তারিক চয়ন।

তিনি লিখেছেন, ‘ছোটবেলা থেকেই পত্রপত্রিকায় লেখালেখির সাথে যুক্ত ছিলাম। স্কুলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া কর্মসূচির সদস্য হিসেবে লিটলম্যাগ সম্পাদনা করতাম। কলেজ জীবনের একেবারে প্রথম দিনেই কুমিল্লায় আমাদের দুই বন্ধুর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ছাপা পত্রিকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের একেবারে শুরু থেকেই প্রত্যক্ষভাবে ছাত্ররাজনীতিতে জড়ালে পত্রপত্রিকায় লেখালেখির পরিমাণ কমে গেলেও সেটা কখনোই থেমে থাকেনি।’

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ হয় ২০১০ সালে। এর আগে থেকেই শুভাকাঙ্ক্ষীরা বলছিলেন, ‘চয়ন, পত্রিকায় অনেক লিখলি, এবার একটা বই প্রকাশ করে ফেল।’ একটা পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিলাম হ্যাঁ, একটা বই প্রকাশ করা প্রয়োজন। ২০১২ সালে এসে সিদ্ধান্ত নিলাম, নিজের লেখা কোনো বই নয়; অনেক লেখকের লেখা সংগ্রহ করে একটি বই সম্পাদনা করবো। তাতে দেশের সব গুণিজনদের লেখা থাকবে। বইয়ের বিষয়বস্তু হবে ‘তারেক রহমান’। কেন তারেক রহমান? কারণ, কেবলই তুমুল জনপ্রিয়তা আর দেশপ্রেমের জন্য প্রিয় জন্মভূমি ত্যাগে বাধ্য এই ব্যক্তি যে একদিন জনগণের মাঝে ঢের বেশি জনপ্রিয় হয়ে ফিরে আসবেন এবং নেতৃত্ব দেবেন সেই বিশ্বাস ছিল শতভাগ। নিজের প্রকাশিত প্রথম বইয়ের জন্য সেরা উপজীব্য তিনি ছাড়া আর কে হতে পারেন!

২০১২ সালের শেষের দিকে একে একে শুরু করলাম লেখা সংগ্রহের কাজ। শুরুতে যেমন জটিল ভেবেছিলাম, বাস্তবে সেটা ছিল তার চেয়ে কয়েক গুণ দূরুহ। কেন সেটা আরেকদিন লেখা যাবে।

বইটির লেখকদের নাম ও লেখার শিরোনাম প্রকাশ করে তারিক চয়ন লিখেছেনঃ

যাই হোক। তারেক রহমানের সেই চরম দুঃসময়ে তাকে নিয়ে কারা কারা লিখেছিলেন?

১. তারেক রহমানের স্বপ্ন - এমাজউদ্দীন আহমদ, প্রাক্তন উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

২. তারেক রহমানঃ নতুন প্রজন্মের এক অবিসংবাদিত নেতা - ড. আ.ফ.ম. ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

৩. তারেক রহমানের ভাবনায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা - অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ।

৪. তারেক রহমান - গণমানুষের অনস্বীকার্য নেতা - অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস.এ. ইসলাম, রসায়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

৫. তারেক রহমানকে আমি যেভাবে মূল্যায়ন করি - প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া, সাবেক চেয়ারম্যান, পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

৬. বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও তারেক রহমান- এক বৃন্তের তিন ফুল - ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

৭. তারেক রহমানের কাছে এদেশের মানুষের প্রত্যাশা - ড. আবুল হাসনাত, অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজী বিভাগ, সিনেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

৮. তারেক রহমান: জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার - ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক, মার্কেটিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

৯. শিক্ষার উন্নয়নে তারেক রহমান - মো. আলমগীর হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

১০. লিবারেল ন্যাশনালিজম, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও তারেক রহমান: একটি সম্ভাবনা - কাজী এম.এইচ. সুপণ, সহকারী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

১১. দুঃখের তিমিরে যদি জ্বলে মঙ্গল-আলোক... - ইনাম আহমদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা।

১২. তারুণ্য, আগামী দিনের বাংলাদেশ এবং তারেক রহমান - মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বীর প্রতীক।

১৩. তারেককে দেখেছি জিয়ার মতো - চাষী নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার।

১৪. তারেক রহমান: ভবিষ্যৎ বিশ্বনেতা - ব্যারিস্টার নাসির উদ্দীন অসীম, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক, বিএনপি।

১৫. একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তারেক রহমানের বিকল্প নেই - ড. খোন্দকার আকবর হোসেন (বাবলু), কৃষি বিষয়ক সম্পাদক, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি।

১৬. দৃঢ়চেতা তারেক রহমান - ব্যারিস্টার গিয়াস উদ্দিন রিমন।

১৭. তারুণ্যের প্রতীক তারেক রহমান এবং আধ্যাত্মিক রাজধানী সিলেট - আরিফুল হক চৌধুরী, সদস্য, বিএনপি কার্যনির্বাহী কমিটি।

১৮. উত্তরাধিকারে শুরু, যোগ্যতায় এগিয়ে চলা - শাকিল ওয়াহেদ, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, বিএনপি।

১৯. শহীদ জিয়া থেকে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আধুনিক স্বনির্ভর রাজনৈতিক প্রবক্তা তিনজনই একই ষড়যন্ত্রের শিকার - অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

২০. সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে সে আসবে - আজিজুল বারী হেলাল, সাবেক সভাপতি, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

এখানে লেখকদের তৎকালীন পরিচয় ব্যবহার করা হয়েছে। লেখকদের কেউ কেউ প্রয়াত হয়েছেন। যাই হোক, এত কষ্ট আর এত ঝুঁকি নিয়ে এগোনো বইটি অনিবার্যকারণ বশত আজও আলোর মুখ দেখেনি। ভাবছি, ১৩ বছরে সারা দুনিয়ায় কত কত বই প্রকাশিত হলো, যাকে নিয়ে বইটি লেখা সেই তারেক রহমানও দেড় যুগ দীর্ঘ (জোরপূর্বক) নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে মাতৃভূমিতে ফিরে এলেন; কিন্তু আমার বইটি আর প্রকাশিত হলো না! সে না হোক, বইটি প্রকাশ করার জন্য যেসব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও সাংবাদিক ভাইরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা।

এমআরএম/এএসএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]