আবারও তীরে এসে তরি ডুবলো বাংলাদেশের

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:৩৩ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০১৮

এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের কাছে সিনিয়রদের হারের একটা প্রতিশোধ নেয়ার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটাররা। অনুর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের মুখোমুখি হয়েও সেই জয় তুলে নিতে ব্যর্থ হলো বাংলাদেশের যুবারা। একেবারে তীরে এসে তরি ডোবালো তারা। হেরে গেলো মাত্র ২ রানের ব্যবধানে।

আরব আমিরাতে সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপের ফাইনালেও ভারত একেবারে শেষ বলে এসে ৩ উইকেটের ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশকে। ২২২ রান করেও ভারতকে একেবারে শেষ বল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের বোলাররা। অনুর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে এসেও বোলাররা ভালো করলেও, একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে বাংলাদেশের পরাজয়টা নিশ্চিত করে দেন ব্যাটসম্যানরা।

এক সময় জরের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৪৮ বলে ১২ রান। হাতে ছিল ৪ উইকেট। ২২ বলে প্রয়োজন ছিল ৩ রান। তবুও পারলো না বাংলাদেশ। প্রয়োজনীয় রানটুকুই নিতে পারলো না যুবা ব্যাটসম্যানরা। শেষ মুহূর্তের চাপ নিতে না পেরে শেষ মুহূর্তে রিস্কি রান নিতে গিয়ে হেরে বসলো টাইগার যুবারা।

জয়ের একেবারে কাছাকাছি গিয়েও তীরে এসে তরি ডোবার কাজটি করে ফেললো অনুর্ধ্ব-১৯ দলের ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ১৭৩ রানও তুলতে পারলো না তারা। অলআউট হয়ে গেলো ১৭০ রানে। ২২ বলে ৩ রান দরকার থাকা অবস্থায় শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মিনহাজুল। নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে সিঙ্গেলস নিতে গিয়ে রান আউট হন। তিনি সিঙ্গেল রান নিতে গিয়ে এ প্রান্তে এসে আবার নিজের এন্ডে ফেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু ক্রিজে পৌঁছার আগেই রানআউট হয়ে গেলেন তিনি।

অথচ ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন দুই মিডল অর্ডার আকবর আলি ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি। দু’জনই স্বচ্ছন্দে, অবলীলায় ভারতীয় যুবাদের বোলিং মোকাবিলা করে জয়ের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৭৪ রান যোগ হওয়ার পর আকবর আলি সুইপ করতে গিয়ে আকাশে ক্যাচ তুলে বিদায় নিলে সাজানো বাগান তছনছ হয়ে যায়।

এরপর আকবর আলি ৬৩ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয়ার পর শামীম পাটোয়ারি একাই জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন দলকে। কিন্তু জয় থেকে মাত্র ১২ রান দুরে দাঁড়িয়ে শামীমও ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। ৭৮ বলে ৫৯ রান করা শামীম ভারতীয় পেসার অজয় গঙ্গাপুরামের স্লোয়ারে শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। বাংলাদেশ তখন জয় থেকে মাত্র ১২ রান দুরে।

১৭৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর শুরুটা কিন্তু মোটেও ভালো ছিল না বাংলাদেশের। দুই ওপেনার প্রান্তিক নওরোজ নাবিল এবং সাজিদ হোসেন আউট হয়ে যান ২১ রানের মধ্যে। দলীয় ৪২ রানে ফিরে যান মাহমুদুল হাসান জয়ও। যদিও তিনি করেন ২৫ রান। ৫৯ রানে তৌহিদ হৃদয় এবং ৬৫ রানে রিশাদ হোসেন আউট হয়ে গেলে দারুণ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

এরপরই মূলতঃ জুটি গড়ে তোলেন আকবর আলি এবং শামীম হোসেন পাটোয়ারি। ৬ষ্ঠ উইকেটে তারা যোগ করেন ৭৪ রান। দলীয় ১৩৯ রানের মাথায় আকবর আলী আউট হয়ে গেলে আবারও বিপর্যয় শুরু হয়। যার সমাপ্তি ঘটে জয় থেকে মাত্র ২ রান দুরে থাকতে।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের সাঁড়াসি বোলিংয়ের সামনে ৪৯.৩ ওভারে মাত্র ১৭২ রানে অলআউটে হয়ে যায় ভারত। ৩৭ রান করেন ইয়াসাসভি জিসওয়াল। ৩৫ রান করেন অনুজ রাওয়াত। ৩৬ রান আসে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সামির চৌধুরীর ব্যাট থেকে। ২৮ রান করেন আয়ুশ বাধোনি। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। ২টি করে উইকেট নেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, রিশাদ হাসান এবং তৌহিদ হৃদয়। ১ উইকেট নেন মিনহাজুর রহমান।

আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।