হাসারাঙ্গাকে মুরালি-পেরেরা হতে দিলেন না সাইফউদ্দিন

চীনের দুঃখ যদি হয় হোয়াংহো নদী, তাহলে হোম অব ক্রিকেটে টাইগারদের দুঃখের নাম শ্রীলঙ্কা। একবার নয়, শেরে বাংলায় দুই দুইবার লঙ্কানদের বাগে পেয়েও হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।
প্রথমবার ২০০৯ সালের ১৬ জানুয়ারি। তিন জাতি আসরের ফাইনালে বাংলাদেশ ১৫২ রানে অলআউট হওয়ার পরও জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিল।
পেসার নাজমুল হোসেনের (১০ ওভারে ৩০ রানে ৩ উইকেট) বিধ্বংসী বোলিংয়ের মুখে মাত্র ৬ রানে লঙ্কান ইনিংসের অর্ধেকটার পতন ঘটেছিল। এরপর অ ৫১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে লঙ্কানরা; কিন্তু তারপরও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২ উইকেটের প্রায় অবিশ্বাস্য জয় তুলে নিয়ে মাঠ ছাড়ে শ্রীলঙ্কা।
তাদের সেই অবিস্মরণীয় জয়ে ব্যাট হাতে নায়ক ছিলেন বিখ্যাত অফস্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন। এ বিশ্বসেরা অফস্পিনার সেদিন ব্যাট হাতে ত্রাণকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বাংলাদেশকে হতাশায় ডোবান। ১০ নম্বরে নেমে মুত্তিয়া মুরালিধরন ১৬ বলে ৩৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেললে শ্রীলঙ্কা পায় অবিশ্বাস্য জয়ের দেখা।
এরপর ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে হারানোর সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। প্রথম ব্যাট করতে নেমে এক পর্যায়ে ৬৭ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল লঙ্কানদের স্কোর ১০০ ও পার হবে না।
কিন্তু এই কঠিন সংকটেও হঠাৎ মাথা তুলে দাঁড়ান থিসারা পেরেরা। এ পেস বোলিং অলরাউন্ডার চরম বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে ৯ নম্বরে নেমে দুঃসাহসী এক ইনিংস উপহার দিয়ে বাংলাদেশের স্বপ্ন ভঙ্গের কারণ হসেবে আবির্ভূত হন।
থিসারা পেরেরার ৫৭ বলে ৬ ছক্কা ও ৪ বাউন্ডারি দিয়ে সাজানো ৮০ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংসে লঙ্কানরা খাদের কিনারা থেকে ১৮০’র ঘরে পৌঁছে যায়। পরে বাংলাদেশ আর পারেনি। হেরে যায় ১৩ রানে।
আজ ২৩ মে শেরে বাংলায়ও হঠাৎ তেমন ঘটনা ঘটার উদ্রেক ঘটেছিল। বাংলাদেশের ২৫৭ রানের জবাবে ১০২ রানে ৬ উইকেট হারিয়েও শেষ পর্যন্ত হার মানলো ৩৩ রানে। ১৪৯ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পরও ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা একাই লড়াই চালিয়ে যান। এক পর্যায়ে বাংলাদেশের জয় নিয়েও জাগে সংশয়।
শেষ পর্যন্ত পেসার সাইফউদ্দীনের বলে হাসারাঙ্গা ৬০ বলে ৭৪ রানে আউট হলে হাফ ছেড়ে বাঁচেন টাইগার অধিনায়ক তামিম।
লঙ্কান ইনিংসের ৪৪তম ওভারের শেষ বলে আউট হন হাসারাঙ্গা। এরপর শেষ ৩৬ বলে লঙ্কানদের দরকার ছিল ৪৭ রান। কিন্তু বাকিরা আর মাত্র ১৩ রান যোগ করতেই শেষ হয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস।
ভাবুন তো! একবার চরম বিপদে সাহসী নাবিকের মত হাসরাঙ্গার ওই ইনিংসটি যদিও আরও খানিকটা দীর্ঘায়িত হতো, তাহলে কী হতো?
এআরবি/আইএইচএস/এমকেএইচ