দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটিংয়ে অভিন্ন চিত্র, ইনিংস হারের শঙ্কা

বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে গেছে ম্যাচের আড়াই দিনের বেশি। তবু ফল আসার বেশ ভালো সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে মিরপুর টেস্টে। এটি সম্ভব হচ্ছে মূলত বাংলাদেশ দলের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের কারণে। প্রথম ইনিংসের ভরাডুবির পর দ্বিতীয় ইনিংসেও চলমান রয়েছে ব্যাটিং বিপর্যয়।
সাজিদ খানের ঘূর্ণিতে বাংলাদেশ দল ৮৭ রানে অলআউট হওয়ায় ম্যাচে ফল পাওয়ার আশায় ফলোঅন করিয়েছে পাকিস্তান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেও মাত্র ২৫ রানেই সাজঘরে ফিরে গেছেন দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও সাদমান ইসলাম অনিক, তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত ও অধিনায়ক মুমিনুল হক।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৯ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৫ রান। ইনিংস ব্যবধানের পরাজয় এড়াতে এখনও ১৮৮ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। হাতে আছে আর ৬ উইকেট। পঞ্চম উইকেট জুটিতে খেলছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও উইকেটরক্ষক ব্যাটার লিটন দাস।
ফলোঅনে পড়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান মাহমুদুল জয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটিই তার প্রথম রান। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারেননি। ব্যক্তিগত ছয় রানে হাসান আলির বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান তিনি। পরের ওভারে শাহিন আফ্রিদির বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে ধরা পড়েন ২ রান করা সাদমান।
অধিনায়ক মুমিনুল হকের আউটটি নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। হাসান আলির ভেতরে ঢোকা বলে লেগ বিফোর হন মুমিনুল। রিপ্লে'তে দেখা যায় বলের সঙ্গে ব্যাট ও প্যাডের আঘাতের সময় প্রায় কাছাকাছি। আবার বল ঠিক ব্যাটেই লেগেছে কি না তা স্পষ্ট বোঝাও যায়নি।
কিন্তু মাঠের আম্পায়ার আউট দেওয়ায় এবং শতভাগ নিশ্চিত প্রমাণ না থাকায় সেই সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেননি টিভি আম্পায়ার। ফলে ৭ রানে ফিরতে হয় মুমিনুলকে। এরপর শাহিন আফ্রিদির বাউন্সারে গালিতে ফাওয়াদ আলমের হাতে ধরা পড়েন ৬ রান করা শান্ত।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ফলোঅন এড়াতে বাংলাদেশকে করতে হতো মাত্র ১০১ রান। কিন্তু সেটিও করতে পারলো না বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। হোম অব ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো একশ রানের নিচে অলআউট হওয়ার লজ্জায় ডুবে ফলোঅনে পড়েছে মুমিনুল হকের দল।
আগেরদিন করা ৭ উইকেটে ৭৬ রানের সঙ্গে আজ যোগ হয়েছে আর মাত্র ১১ রান। সবমিলিয়ে দেশের মাটিতে সর্বনিম্ন ৮৭ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জায় ডুবেছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ঠিক ৮৭ রানেই অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশকে ৮৭ রানে গুড়িয়ে দেওয়ার পথে ৪২ রান খরচায় ৮ উইকেট নিয়েছেন পাকিস্তানের অফস্পিনার সাজিদ খান। যা টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের চতুর্থ সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে এটিই সেরা বোলিং ফিগার। পাশাপাশি বাংলাদেশের মাটিতে দ্বিতীয় সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডও নিজের করে নিয়েছেন সাজিদ।
মঙ্গলবার ম্যাচের চতুর্থ দিনই ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন পাকিস্তানি অফস্পিনার। আজ দিনের প্রথম ওভারেই তাইজুলকে ফেরান তিনি। দিনের দ্বিতীয় ওভারে দারুণ এক ইয়র্কারে খালেদ আহমেদের উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ মাত্র ৭৭ রান।
এরপর এবাদত হোসেনকে নিয়ে ফলোঅন এড়ানোর চেষ্টা করেন সাকিব। কিন্তু ইনিংসের ৩২তম ওভারের শেষ বলে সাজিদের অষ্টম শিকারে পরিণত হয়ে শর্ট কভারে আজহার আলির হাতে ধরা পড়েন তিনি। আউট হওয়ার আগে সাকিব করেন ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৩ রান।
মিরপুরের মাঠে এতোদিন ধরে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড ছিল ১১০ রানের। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশই পড়েছিল এই লজ্জায়। এবার সেটিকেও ছাড়িয়ে মাত্র ৮৭ রানেই গুটিয়ে গেল স্বাগতিক দল। এমনকি দেশের মাটিতেও বাংলাদেশের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড এটি।
এসএএস/এমএস