জমজমাট লড়াইয়ে মোহামেডানকে ৮ রানে হারিয়ে শীর্ষে আবাহনী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:৪৬ পিএম, ০১ মে ২০২৩

সুপার লিগের শুরুটা দারুণ হলো আবাহনীর। এত ভাল সূচনার কথা হয়ত আকাশী-হলুদরাও ভাবেনি। প্রধান ও নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ জামাল গাজী গ্রুপের কাছে হেরেছে প্রথম সেশনেই। এরপর বিকেলে চির প্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে তীব্র লড়াইয়ের পর ৮ রানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের অবস্থানকে আরও মজবুত করলো আবাহনী।

এখন রাউন্ড রবিন ও সুপার লিগ মিলিয়ে ১২ ম্যাচে ১১ নম্বর জয়ে আবাহনীর পয়েন্ট দাঁড়ালো ২২। যা নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ জামালের ১২ ম্যাচে ২০‘এর চেয়ে ২ পয়েন্ট বেশি।

প্রথম সেশনে জাকের আলী অনিক (৮২ বলে ৬৩) আর অধিনায়ক মোসাদ্দেকের (৭০ বলে ৬৩) জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ২৫৮ রানের লড়াকু পুঁজি গড়েছিল আকাশী হলুদরা। দেখার বিষয় ছিল সাকিব, মিরাজ ও রনি তালুকদার ছাড়া মোহামেডান এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে পারে কি না?

abahani-mohammedan

শেষ পর্যন্ত তা পারেনি ইমরুল কায়েসের দল। কি করে পারবে? ওয়ান ডাউনে নামা মাহিদুল ইসলাম অংকন আর অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছাড়া বাকি কেউ তেমন কার্যকর ভূমিকাই রাখতে পারেননি। তরুণ আরিফুল ইসলাম (৫৯ বলে ৩০) আর আরিফুল হক (১৪ বলে ২৬) চেষ্টা করেও ফিনিশিং টাচ দিতে পারেননি।

দুই ওপেনার ইমরুল (২), সৌম্য সরকার (৮) আর লঙ্কান রিক্রুট কামিন্দু মেন্ডিস (৩ বলে ১) সবচেয়ে বেশি ব্যর্থ। এর মধ্যে অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের উইকেটটি জমা পড়ে অফস্পিনার নাহিদুলের বলে।

নাহিদুলকে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে ডিপ মিড স্কোয়ার লেগে ধরা পড়েন মোহামেডান ক্যাপ্টেন। আর সৌম্য ও কামিন্দু মেন্ডিসকে সাজঘরে ফেরত পাঠান পেসার সাকিব। আগের বলে স্লিপে ক্যাচ আউট হওয়ার হাত থেকে বেঁচে পরের বলে লেগবিফোর উইকেটের ফাঁদে জড়ান সৌম্য। কামিন্দু মেন্ডিস হন কট বিহাইন্ড। প্রথম ৪ জনের তিনজন মিলে ১০ রান করায় হিসেব কঠিন হয়ে যায় মোহামেডানের। শুরুতে ব্যাকফুটে চলে যায় ইমরুলের দল।

সেখান থেকে দলকে খেলায় ফেরাতে প্রাণপন চেষ্টা করেছেন আরিফুল ইসলাম ও কিপার মাহিদুল ইসলাম অংকন; কিন্তু সে চেষ্টাও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। আবার আঘাত হেনে আরিফুল ইসলামকে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে পরাস্ত করেন পেসার তানজিম সাকিব।

এরপর মোহামেডানের হয়ে লড়াই করেন তিনজন; মাহিদুল ইসলাম অংকন, রিয়াদ ও আরিফুল হক; কিন্তু কেউই শেষ করতে পারেননি। কিপার অংকন (১১৩ বলে ৮৮) আর রিয়াদ (৬৩ বলে ৫৪) জোড়া ফিফটি হাঁকিয়ে ফিরে যান। এরপর আরিফুল হক ১৪ বলে তিন ছক্কায় ২৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচ ক্লোজ করে ফেলেন; কিন্তু ফিল্ডার আফিফের সোজা বল চলে যাওয়ার পরও অপ্রয়োজনে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান আরিফুল।

ম্যাচের ওই অংশে বল হাতে নিয়ে আবাহনীকে খেলায় ফেরান অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। প্রথমে অংকন পরে রিয়াদকে আউট করে খেলার নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে নেন আবাহনী ক্যাপ্টেন।

এরপর শেষ ওভারে মোহামেডানের ২০ রান দরকার থাকা অবস্থায় বোলিং করে তরুণ পেসার মুশফিকের হাতে প্রথম বলে ছক্কা হজম করেও ঘাবড়ে না গিয়ে মোসাদ্দেক মাথা ঠান্ডা রেখে বল করে জয় নিশ্চিত করেন। শেষ ওভারে ১১ রান দিয়ে সেই মুশফিকের উইকেট নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন তিনি।

ব্যাট হাতে ৭০ বলে ৬৩ রানের আক্রমনাত্মক ইনিংস উপহারের পর ৮ ওভারে ৫১ রানে ৪ উইকেট দখল করে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা অলরাউন্ড পারফরমেন্স উপহার দিয়ে ম্যাচ সেরা হলেন আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

আবাহনী: ২৫৮/৭, ৫০ ওভার (বিজয় ১১, নাইম শেখ ২, মাহমুদুল হাসান জয় ১৯, জাকের আলী অনিক ৬৩, আফিফ ৩৬, মোসাদ্দেক ৬৩, খুশদিল শাহ ২৯, সাইফউদ্দীন ১৬*, নাহিদুল অপরাজিত ৯, অতিরিক্ত ১০; মুশফিক হাসান ২/৩২, শুভাগত হোম ২/৪৭, নাজমুল অপু ১/৬৩, খালেদ ১/৪৯)।

মোহামেডান: ২৫০/৮, ৫০ ওভার (ইমরুল ১, সৌম্য ৮, অংকন ৮৮, মেন্ডিস ১, আরিফুল ইসলাম ৩০, মাহমুদউল্লাহ ৫৪, আরিফুল ২৬; মোসাদ্দেক ৪/৫১, তানজিম সাকিব ৩/৪৮)।

ফল: আবাহনী ৮ রানে জয়ী।

এআরবি/আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।