পেসার মুশফিকের জীবনের গল্প
ক্রিকেট খেলেই চলছে সংসার, বাবা-মাকে চাকুরি থেকে ফিরিয়েছেন বাড়িতে

সবে কৈশোর পেরিয়েছেন তখন। বয়সটা ২০-ও পার হয়নি। এ অল্প বয়সেই জীবনযুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নিতে হয় লালমনিরহাটের সাহসী যুবা মুশফিক হাসানের।
আর্থিক প্রতিকূলতা আর বাবা-মায়ের সান্নিধ্য ছাড়া গ্রামের বাড়িতে নানির ছত্রছায়ায় কেটেছে শৈশব-কৈশোরের কিছুটা সময়। তার ও ছোট বোনের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে গার্মেন্টসে চাকুরি নিয়ে ঢাকা চলে এসেছিলেন মুশফিক হাসানের বাবা-মা।
মুশফিক তখন ছিলেন নানির কাছে। নানির সান্নিধ্য আর পরিচর্যায় লালমনিরহাটে বেড়ে উঠার পাশাপাশি ক্রিকেটচর্চা। বয়স ১৬ হওয়ার আগে লালমনিরহাট জেলা দ্বিতীয় বিভাগে সুযোগ মেলে। সেখানে মুশফিক হাসান নিজেকে চেনান অনেক জোরে বল করে।
দ্রুতগতিতে বল করে এক ম্যাচে উইকেট ভেঙে সবার নজরে আসেন এ দীর্ঘদেহী ফাস্টবোলার। সবাই জেনে যায়, এ কিশোর অনেক জোরে বল করতে পারেন। তারপর বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৬ থেকে অনূর্ধ্ব- ১৮ দলের ট্রায়ালে জুনিয়র নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের অপরিহার্য্য সদস্য সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার হাসিবুল হোসেন শান্তর নজরে পড়েন।
ট্রায়ালে মাইল মিটারে ধরা পড়ে মুশফিকই সবচেয়ে জোরে বল করেন। আর সেই জোরে বোলিংটাই তাকে সোজা যুব দলে (অনূর্ধ্ব-১৯) সুযোগ করে দেয়।
সেই দলে চান্স পেয়েই বাবা-মাকে ঢাকা থেকে আবার লালমনিরহাটে ফিরিয়ে নেন মুশফিক। বলেন, ‘আপনাদের আর কষ্ট করে চাকুরি করতে হবে না। আপনারা বাড়িতে থাকেন। আমিই আয়-রোজগার করে সংসার চালাবো।’
বলার অপেক্ষা রাখে না, ক্রিকেট খেলেই এখন সংসারের যাবতীয় খরচ বহন করছেন ২০ বছরের মুশফিক। আজ বৃস্পতিবার দুপুরে জাগো নিউজকে সে তথ্য জানিয়ে মুশফিক বলেন, ‘আমাদের ভরণপোষনের জন্যই বাবা-মা লালমনিরহাট ছেড়ে রাজধানীতে কাজের জন্য এসেছিলেন। আমি যুব দলে জায়গা পেয়েই বাবা-মাকে গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়ে নেই। এখন তারা বাড়িতেই থাকেন।’
এআরবি/এমএমআর/জিকেএস