শেষ বলে পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:০১ এএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

শেষ ২ ওভারে শ্রীলঙ্কার দরকার ১২ রান। হাতে ৫ উইকেট। তখন পর্যন্ত ম্যাচটা লঙ্কানদেরই হাতে। বল হাতে নিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। দেখালেন ঝলক।

ওই ওভারে মাত্র ৪ রান নিতে পারলো স্বাগতিকরা। আফ্রিদি টানা দুই বলে তুলে নিলেন ২ উইকেট। জমে গেলো ম্যাচ, টানটান উত্তেজনা কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে।

শেষ ওভারে শ্রীলঙ্কার লাগবে ৮ রান। হাতে ৩ উইকেট। এমন এক পরিস্থিতিতে অভিষিক্ত পেসার জামান খানের হাতে বল তুলে দিলেন বাবর আজম। জামান দুর্দান্ত করলেন, চাপের মুখে স্নায়ু ধরে রাখলেন। প্রথম তিন বলে লঙ্কানরা নিতে পারলো মাত্র ২, চতুর্থ বলে রানআউটে উইকেট।

ম্যাচ তখন যেন হেলে পড়েছে পাকিস্তানের দিকে। কিন্তু সেট ব্যাটার চারিথ আসালাঙ্কা যে রয়ে গেছেন। চতুর্থ বলটি ব্যাটের কানায় লেগে কিপারের পাশ দিয়ে হয়ে গেলো বাউন্ডারি। শেষ বলে দরকার ২ রান। আসালাঙ্কা ডিপ স্কয়ার লেগে বল পাঠিয়ে সহজেই দুই নিয়ে নিলেন। বাঁধভাঙা উল্লাস পুরো স্টেডিয়ামজুড়ে।

সবমিলিয়ে ২ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস এক জয় শ্রীলঙ্কার, পাকিস্তানের বিদায়। এ নিয়ে ১১তম বারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে নাম লেখালো লঙ্কানরা। রোববার শিরোপার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ ভারত।

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ৪২ ওভারে ২৫২। বড় রান তাড়ায় মূল ভিত গড়ে দেন কুশল মেন্ডিস আর সামারাবিক্রমা। শেষটা করেন আসালাঙ্কা।

মেন্ডিস ৮৭ বলে ৮ চার আর ১ ছক্কায় খেলেন ৯১ রানের ইনিংস। সামারাবিক্রমা করেন ৫১ বলে ৪৮। আর ৪৭ বলে ৪৯ রানে অপরাজিত থেকে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন আসালাঙ্কা।

পাকিস্তানের ইফতিখার আহমেদ ৩টি আর শাহিন শাহ আফ্রিদি নেন দুটি উইকেট।

এর আগে ২৭ দশমিক ৪ ওভারে পাকিস্তান ৫ উইকেটে ১৩০ রান তোলার পর ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি। বেশ কঠিন পরিস্থিতিতেই ছিল বাবর আজমের দল। কিন্তু বৃষ্টির পর যেন অন্য চেহারায় হাজির পাকিস্তান।

বিপদ থেকে দলকে টেনে তোলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান আর ইফতিখার আহমেদ। শুধু টেনে তোলাই নয়, ষষ্ঠ উইকেটে ৭৮ বলে ১০৮ রানের ঝোড়ো জুটি গড়েন তারা।

jagonews24

৪০ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৪৭ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত ইফতিখার আউট হন। তবে ততক্ষণে পাকিস্তানের বেশ ভালো সংগ্রহ (২৩৮) এসে গেছে বোর্ডে। শেষ পর্যন্ত ৪২ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫২ রান তোলে পাকিস্তান।

দারুণ ব্যাটিং করা রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ৭৩ বলে ৮৬ রানে। মারকুটে এই ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কা হাঁকান উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার।

মাথিসা পাথিরানা ৬৫ রানে ৩টি আর প্রমোধ মধুশান ৫৮ বলে ২ উইকেট শিকার করেন।

এশিয়া কাপের অঘোষিত সেমিফাইনাল। বৃষ্টির কারণে এই ম্যাচে সময়মতো টস হয়নি। প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় পর ম্যাচ শুরু হয়। ফলে ৫ ওভার করে কাটা হয় দুই ইনিংসে। অর্থাৎ ৫০ ওভারের বদলে ৪৫ ওভারের ম্যাচ ধরা হয় শুরুতে। পরে বৃষ্টিবাধায় আরও তিন ওভার কাটায় নেমে আসে ৪২ ওভারে।

মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে শুরুটা ভালো ছিল না টস জিতে ব্যাটিং করতে নামা পাকিস্তানের। ৯ রান তুলতে তারা হারিয়ে বসে ওপেনার ফাখর জামানকে (১১ বলে ৪)। লঙ্কান পেসার প্রমোদ মধুশানের বলে বোল্ড হন তিনি।

পাকিস্তান এমনিতেই বেশ ধীরগতিতে ব্যাটিং করছিল। এর মধ্যে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি। প্রথম ৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে তারা তুলে মাত্র ১৩ রান।

তবে দ্বিতীয় উইকেটে বাবর আজম আর আবদুল্লাহ শফিক ৬৪ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নেন। ৩৫ বলে ২৯ করে ওয়াল্লালাগের বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন বাবর।

এরপর আবদুল্লাহ শফিক হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। যদিও ফিফটি পূরণ করার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৬৯ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় ক্যারিয়ারসেরা ৫২ রানের ইনিংস খেলে পাথিরানার শিকার হন ডানহাতি এই ব্যাটার। দলীয় ১০০ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় পাকিস্তান।

শফিক সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেও পারেননি মোহাম্মদ হারিস। এবারের এশিয়া কাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে পাথিরানাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি (৯ বলে ৩)।

এরপর ১২ বলে ১২ রান করা মোহাম্মদ নওয়াজ বোল্ড হন থিকসানার বলে। ১৩০ রানে ৫ উইকেট হারায় পাকিস্তান। সেখান থেকে রিজওয়ান-ইফতিখারের জুটি।

এমএমআর/এমআরআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।